নিউইয়র্কের ব্যস্ততম রাস্তায় পার্কিং রুল অমান্য করে পার পাওয়া কঠিন।
একদিন জরুরি প্রয়োজনে রাস্তার পাশেই গাড়ি থামিয়ে কিছু কিনতে গেল কামাল। নিমিষেই ট্রাফিক এজেন্ট একশ' বিশ ডলারের জরিমানার কমলা রঙের খাম ধরিয়ে দিলেন!
কামাল দ্রুততম সময়ে ফিরে এলো এবং দুঃখিত কণ্ঠে বললো, ‘আহা, গেলাম আর আসলাম, এরই মধ্যে টিকেট ধরিয়ে দিলে!’ কালো চামড়ার ট্রাফিক এজেন্ট মুখ বেঁকিয়ে বললেন, ‘ডোন্ট ক্রাই লাইক ... ’। সে একটি খারাপ শব্দ ব্যবহার করলো, এবং জানতে চাইলো, ‘তুমি কি মুসলিম?’ গাড়িতে এক বন্ধু, বন্ধুপত্নী এবং তাঁদের শিশুকন্যা ছিল। এদের সামনে এমন বিশ্রী ভাষা! কামালের ভীষণ আত্মসন্মানে লাগলো। সে উত্তেজিত হয়ে উঠলো। এবং ট্রাফিক এজেন্টের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়লো। জরিমানা করেছে, এটি তার পেশাগত দায়িত্ব। কিন্তু দায়িত্বশীল পদে থেকে কোনভাবেই খারাপ ভাষা ব্যবহার করতে পারে না। তাছাড়া ‘তুমি কি মুসলিম’ প্রশ্নটি দিয়ে সে মুসলমান কিংবা ইসলাম ধর্মের প্রতি তার বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করেছে।
যাক্, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ৯১১ নাম্বারে ফোন করা হলো। নিউইয়র্কে এই নাম্বারে ফোন করলে মুহূর্তেই সহযোগিতার জন্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে হাজির হয়। যথারীতি পুলিশ এলো। অভিযোগ শুনলো। একটি নাম্বার দিয়ে বললো নির্দিষ্ট বিভাগে অভিযোগ জানাতে। সেখানে অভিযোগ জানানোর পর সহসাই একদিন সেই বিভাগের লোকজন বাসায় এসে আরো বিস্তারিত জেনে গেলো। এরপর বিভাগীয় তদন্ত হয়। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। প্রথমে সাময়িক শাস্তিস্বরূপ ট্রাফিক এজেন্টকে অন্যত্র বদলি করা হয়। অতঃপর এক দুপুর আর বিকেলের সন্ধিক্ষণে বাসার কলিংবেল বেজে ওঠে। দরজা খুলতেই দেখি দু'জন ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের লোক। একটি খাম এগিয়ে দিয়ে বললেন, অভিযুক্ত ট্রাফিক এজেন্টকে চাকুরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, সেটিরই একটি কপি এটি।
লেখক: নিউইয়র্ক প্রবাসী (লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত)
আআ