আওয়ার ইসলাম: ভারতের কেরালা রাজ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের অপরাধে খুন হওয়া ফয়সালের মাও এবার ইসলাম গ্রহণ করল। হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করায় ফয়সাল নামের ওই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)।
সেই কাজের প্রতিবাদ হিসেবে এবার নিহত সেই তরুণের মা মীণাক্ষীও ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মুসলিম হওয়ার পর তিনি নিজের নাম রেখেছেন জামিলা।
কেরালার মালাপ্পুরাম জেলার কোদিনহিতে মঙ্গলবার মাউনাতুল ইসলাম সভার একজন আলেমেরে মাধ্যমে জামিলা ইসলাম গ্রহণ করেন।
জানা গেছে, কোদিনহির অনিল কুমার (৩০) সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে ছয় মাস আগে তিনি স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করে নিজের নাম রাখেন ফয়সাল।
চারমাসে আগে তিনি ছুটিতে ভারতের নিজ বাড়িতে ফেরেন। এ সময় ফয়সালের আহ্বানে তার স্ত্রী ও তিন সন্তানও ইসলাম গ্রহণ করেন।
এনিয়ে ফয়সালের উপর তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয় আরএসএস ও বিজেপি নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত ছিল। তারা ফয়সালকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ছুটি শেষে সৌদি ফিরে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে গত ১৯ নভেম্বর কোদিনহির ফারুকনগরের একটি মুদি দোকানের সামনে ফয়সালকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরে ফয়সালকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বোনের স্বামী বিনোদসহ আরএসএসের আট সদস্যকে গ্রেফতার করে কোনদোত্তি সার্কেল পুলিশ। অন্য সাত অভিযুক্তরা হলেন হরিদাসান, লিগেশ, প্রদীপ, শাজি, সানি, সাজিশ এবং জয়প্রকাশ।
এদিকে ফয়সাল নিহত হওয়ার পরও তার স্ত্রী ও তিন সন্তান ফের হিন্দু ধর্মে ফেরত না গিয়ে মুসলিম হিসেবেই জীবন যাপনের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। তারা ইসলামের মৌলিক শিক্ষা গ্রহণ করে বাড়ি ছেড়ে পোনানি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
এ কথা জেনে ফয়সালের মা মীনাক্ষীও ইসলাম গ্রহণ করে তাদের সঙ্গে যাওয়ার কথা জানান। পরে মঙ্গলবার তিনি মুসলিম হিসেবে ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম রাখেন জামিলা।
জামিলা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার ছেলে ফয়সাল পরিবারের অনুমতি নিয়েই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। সে ধর্ম পরিবর্তনের পর পরিবারের সবার সঙ্গে খুবই ভালো আচরণ করতো। কিন্তু ইসলাম গ্রহণ করার পর আমাদের প্রতিবেশী আরএসএসের কর্মীরা এবং আমাদের কয়েকজন আত্মীয় ফয়সালের ওপর ব্যাপক ক্ষিপ্ত হয়।
জামিলা বলেন, আমার এক মেয়ের স্বামী বিনোদ ফয়সালকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। সে আমার মেয়েকে বলেছিল যে, সে ফয়সালের মাথা কেটে ফেলবে।
আরআর