আওয়ার ইসলাম: ভারতে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলে সবচে’ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন মুসলিমরা। এমনটাই মন্তব্য করেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা কপিল সিবাল। গতকাল (শনিবার) লক্ষনৌতে কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগের এক সভায় তিনি ওই মন্তব্য করেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, ‘মুসলিমরা সুদ খায় না বলে তাদের বেশিরভাগেরই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই নগদে লেনদেন করে থাকেন। কারণ তারা সুদ খায় না বলে ব্যাংকে অ্যাকাউন্টও রাখেন না।’
তিনি দিল্লির মুসলিম অধ্যুষিত চাঁদনিচক এলাকার কথা তুলে ধরে বলেন, এখানকার মুসলিমদের কথা তিনি জানেন বলেই তিনি এ কথা বলছেন।
নোট বাতিলের ফলে সন্ত্রাসবাদ শেষ হয়ে যাবে এমন তত্ত্বও নাকচ করে দিয়েছেন কপিল সিবাল। তিনি বলেন, ‘নোট বাতিলের ফলে সন্ত্রাসবাদ শেষ হবে না কারণ, সন্ত্রাসের সঙ্গে অর্থের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা অন্তর থেকে বিদ্বেষ নিয়ে সন্ত্রাসী হয়, তারা অর্থের জন্য সন্ত্রাসী হয় না।’ তিনি এ ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কথা টেনে আনেন যেখানে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে অথবা লোকেরা সন্ত্রাসী তৈরি হচ্ছে।
তার মতে, ‘কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে কারো বিরুদ্ধে বিদ্বেষ চরম পর্যায়ে গেলে তবেই কেউ সন্ত্রাসী তৈরি হয়। এজন্য নোট বাতিলের ফলে সন্ত্রাসবাদ শেষ হবে না এবং দরিদ্রদেরও কোনো ফায়দা হবে না।’
পরে কপিল সিবাল লক্ষনৌতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘যে সংসদ ভবনের মাটি চুম্বন করে মাথা নত করে মোদি (প্রথম) প্রবেশ করেছিলেন, আজ সেই সংসদে প্রধানমন্ত্রী কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না। ‘দেশের চৌকিদার’ চোখ বন্ধ করে আছেন, তিনি আরামে ঘুমোচ্ছেন। কিন্তু গরীব মানুষরা জেগে উঠেছেন।’
কপিল সিবাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিন্তু এখন তিনি বুঝতে পারছেন না সামনে এগোবেন কীভাবে। নোট বাতিলের কারণ আর্থিক নয় বরং রাজনৈতিক। উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে জেতার জন্য এমন করা হয়েছে।’
তিনি এক পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, দেশের ১২৫ কোটি মানুষের ৬০ কোটি লোকেদের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। ৩২ কোটি লোকের অ্যাকাউন্টে সারাবছর কোনো লেনদেন হয় নি। তার প্রশ্ন, এসব লোকের কাছে কী কালো টাকা আছে? সরকারের কাছে যদি বিদেশে কালো টাকা জমিয়ে রাখা লোকের নামে তালিকা থাকে তাহলে কেন তা প্রকাশ করা হচ্ছে না? তার মন্তব্য- মোদি বলছেন দেশ বদলাচ্ছে, কিন্তু আসলে দেশ জ্বলছে।
এবিআর