ফারুক ফেরদৌস: গত মাস থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস হামলা চলছে। সেখানে আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই রাজ্যটিতে জঙ্গি নিধনের নামে নির্বিচারে হত্যা, নারী ও শিশুদের নির্যাতন এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটছে ব্যাপকহারে। নির্যাতন নিপীড়নে গৃহহীন হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন বাংলাদেশে আশ্রয় চাইতে আসছে। কিন্তু বাংলাদেশে সরকার যথাসাধ্য রোহিঙ্গাদের ঠেকিয়ে রাখতে চাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দল ও সংগঠন দাবি করছে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেয়ার। এ ব্যাপারে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে কথা হয় চট্টগ্রাম ওমর গণি এম ই এস ডিগ্রী কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সাথে।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আরাকানে মুসলমানদের উপর অসহনীয় জুলুম চলছে। বিশ্ব সম্প্রদায় নীরব। প্রতিদিন নির্বিচারে অসংখ্য মানুষ হত্যা করা হচ্ছে।নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এগুলো করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অং সান সুচির মত নেত্রীও হত্যা নির্যাতনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী মুসলমান দেশ হিসেবে রোহিঙ্গারা আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু এটা সমাধান নয়। সমাধান হলো মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিতে ও জুলুম বন্ধ করতে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করা।
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে লক্ষাধিক শরণার্থী উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিয়ানমার তো এটাই চাচ্ছে। বার্মা থেকে রোহিঙ্গারা বের হয়ে গেলেই তারা সফল।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এমনিতেই বাংলাদেশে জনসংখ্যার চাপ, সামর্থ্যও সীমিত, এর মধ্যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে কাজের অভাবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। অতিতে এরকম দেখা গেছে। আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থাটা একটা সাময়িক ব্যবস্থা হতে পারে কিন্তু তাতে কোনো স্থায়ী সমাধান আসবে না। তাই শুধু সীমান্ত খুলে দাও, আশ্রয় দাও এই দাবিগুলো যৌক্তিক না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচিত আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে আরাকানের নারকীয় পরিস্থিতি তুলে ধরা এবং মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত ও পার্শ্ববর্তী দেশ তাই এ ব্যাপারে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা বাংলাদেশের কর্তব্য।
এফএফ