ফারুক ফেরদৌস
ইসলামি দুনিয়ায় এই সময়ের সবচেয়ে বড় মুহাদ্দিস আল্লামা শেইখ শোয়াইব আরনাউত আর নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জর্ডানের রাজধানী ওমানে পরপারের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান তিনি।
শেইখ শোয়াইব আরনাউত দামেশক শহরে ১৯২৮ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি অত্যন্ত দ্বীনী পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। শৈশবে তিনি ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন এবং অধিকাংশ কুরআন হিফজ করেন।
কোরআনের অর্থ ও তাফসির বোঝার আগ্রহ তাকে অল্প বয়সেই আরবি ভাষা অধ্যয়নে আগ্রহী করে। ১০ বছর বয়স থেকে তিনি দামেশকের মসজিদ, মাদরাসায় আরবি ভাষা, ব্যাকরণ, সাহিত্য ও অলংকার শাস্ত্রের দরসগুলোতে অংশগ্রহণ শুরু করেন। দামেশকে তার আরবি ভাষার শিক্ষকদের মধ্যে আছেন, শেইখ সালেহ ফুরফুর ও শেইখ আরেফ দাওজী। তারা উভয়েই তৎকালীন শামের শ্রেষ্ঠ আলেম বদরুদ্দীন হোসায়নীর ছাত্র। তাদের কাছে তিনি শরহে ইবনে আকিল, কাফিয়া ইবনে হাজেব, যমখশরির মুফাস্সাল, ইবনে হিশামের শুযুরুযযাহাব, জুরজানির আসরারুল বালাগাহ, দালাইলুল ই’জায ইত্যাদি কিতাব অধ্যয়ন করেন।
এরপর তিনি ইলমে ফিকহ অধ্যয়ন করেন। তার অধ্যয়নকৃত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ফিকহে হানাফির কয়েকটি কিতাব হলো, শরম্বুলালির মারাকিল ফালাহ, মাওসিলির আল ইখতিয়ার, কুদুরীর আল কিতাব, হাশিয়া ইবনে আবিদিন ইত্যাদি।
প্রায় সাত বছর লাগাতার তিনি ফিকহ অধ্যয়ন করেন। এর মাঝে তিনি উসুলে ফিকহ, তাফসির, মুসতালাহে হাদিস, ইত্যাদি শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। ফিকহ অধ্যয়নের সময় হাদিসের সহীহ-যয়ীফ চেনার ক্ষেত্রে সমযুগীয়দের দুর্বলতা তার চোখে ধরা পড়ে। এটাই তাকে ইলমে হাদিসের উপর পাণ্ডিত্য অর্জনের দিকে ঠেলে দেয়।
হাদিস শাস্ত্রের প্রায় তিনশ’ খণ্ডকে হাশিয়া, তাহকিক ও তা’লিক যুক্ত করেছেন তিনি। যা প্রকাশিত হয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। শেইখ শুয়াইব আরনাউতের তাহকিককৃত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কিতাব হলো
শরহুস সুন্নাহ লিল বাগাওয়ী
রওযাতুল তালিবিন লিন নাবাবী
মুহায্যাবুল আগানী লি ইবন মানযূর
যাদুল মুয়াস্সার
সিয়ারু আ’লামিন নুবালা
সুনানুত তিরমিযী
সুনানুন নাসায়ী
সুনানু দারা কুতনী
মুসনাদে আহমদ
তারিখুল ইসলাম লিয যাহাবী
শায়েখ ওয়ায়েল হাম্বলী বলেন, একবার শায়েখ শুয়ায়েব আরনাউতকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো হাদিস শাস্ত্রে তার এত আগ্রহের কারণ কী? তিনি জবাবে বলেছেন, একবার আমাকে একটি হাদিস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো। অনেখ খোঁজার পরও হাদিসটি আমি খুঁজে পেলাম না। তখন থেকেই হাদিস শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জনের প্রতিজ্ঞা করি।
সূত্র: আস-সাবিল
এফএফ