রাতেরফুল
একলা আকাশ, একলা আমি ভাবছি মনের ভুলে,
উদাস চোখে দেখছি আকাশ হৃদয় কপাট খুলে।
মিষ্টি হাওয়ায় ভেসে এলো হাস্নাহেনার ঘ্রাণ,
হঠাৎ কতক ঝিঁঝিঁপোকা ডাকলো মনে বান।
জোনাকপোকা জ্বাললো আলো মন ভরালো সবে,
লিলির ছোয়ায় রাত্তিরে সব মিটল আশা তবে!
মেঘ বৃষ্টি সন্ধ্যে আর কাদামাটির জোড়,
জলে ভেজা শীতল বাতাস নাড়িয়ে দিল দোর।
গুড়ুম গুড়ুম মেঘ ডাকে ঐ বিজলি নামে বেয়ে,
খেলার মাঠে দুষ্ট ছেলে ইচ্ছে মতো নেয় নেয়ে।
বিকেল থেকেই একলা পথিক চলছে ঘরের পানে,
কামিনী ঝোপে দোল লেগেছে পুবাল হাওয়ার টানে।
কিচিরমিচির থামিয়ে পাখি চলছে নিড়ের খুঁজে,
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে তখন এলো আপন বুঝে।
কানে গুঁজা কলম খানা হাতে নিয়ে যখন,
আঁকিবুঁকি আঁকছি কেমন ডায়রি জোড়ে তখন!
রজনীগন্ধার সবুজ ডাটায় থুকায় থুকায় সাদা।
গন্ধরাজে মাতাল হতে নেই কোন আজ বাধা।
বকুল বেলির স্নিগ্ধ কোমল আদোরে মাখা ঘ্রাণ,
কবিতা ভুলে সেই কখন কেড়েছে আমার প্রাণ!
শরৎকাল
জলে টইটম্বুর খালবিল আর নদীতে ভর জোয়ার
নীল আকাশে সফেদ তুলো খুলেছে শরৎ দোয়ার।
ছনের বনেও জোয়ার হেনেছে সাদা সাদা কাশফুল।
কলমিলতার ডাটা যেন কিশোরীর বেণী ভাঙ্গা চুল।
দিগন্ত মেখেছে বাহারি রংধনু,সাদা শাপলার মেলা।
শালুক তুলতে গায়ের রাখাল হাকছে বাঁশের ভেলা।
জেলে পারায় সুখের মাতম জেলেনীর ব্যস্ততা শত,
টেংরা পুটী মলা ডেলায় ভাংছে মাছরাঙার ধ্যানব্রত।
তীব্র গরমে অতিষ্ঠ প্রাণ,ক্ষনে বহে ঝড়ো হাওয়া,
ঘরছাড়া দল ভাঙছে নিয়ম, যখন তখন নাওয়া।
পাটখড়ি আর সোনালি আশের মনমাতানো সৌরভ,
যাচ্ছে মনে নাড়া দিয়ে অতীত হারানো গৌরব।
এই রোদ এই বৃষ্টি এই হাসি এই গুমরো আকাশ,
কখনো শীতল দখিণা সমীরণ কখনো গরম বাতাস।
ভোরের ঘাসে শিশির কণা, শিউলির সাদা চাদর,
সুবহে সাদিকে মিষ্টি সুবাস ছড়ায় মায়াবী আদর।
ষড়ঋতুর সোনার বাংলা আজি সেজেছে শরৎ সাজ,
সোনার দেশের সোনার নিয়ম প্রকৃতির রাজাধিরাজ।
আরআর
সাহিত্য বিভাগে আপনিও লিখুন। মেইল : [email protected]