আওয়ার ইসলাম: ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী নিজের দাড়িকে বড় রাখতে ভারতের কেরালা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক মুসলিম পুলিশ কর্মকর্তা। আদালতে দাখিল করা পিটিশনে কেরালার আর্ম ফোর্স-এ কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা রিয়াজ জানান, একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসাবে তিনি যাতে তার দাড়ি রাখতে পারেন তাকে সেই অনুমতি দেওয়া হোক। রিয়াজের অনুরোধের ভিত্তিতে আদালতের পক্ষ থেকে রাজ্য পুলিশের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রিয়াজ জানান, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুলিশ ও আর্মিতে কর্মরত শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা তাদের চুল ও দাড়ি রাখতে পারেন, তাদের দাড়ি রাখার ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় না। কিন্তু মুসলিমদের সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করাটা খুবই খারাপ ব্যাপার।
আবেদনকারী জানিয়েছেন, ২০১২ সালে পবিত্র রমজানের মাসে তাকে দাড়ি রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৩ সালে ৩১ মে রাজ্যের অ্যাসিস্টেন্ট কমাডান্ট অফ পুলিশকে চিঠি দিয়ে স্থায়ীভাবে তার সেই দাড়ি রাখার জন্য অনুরোধ জানান রিয়াজ। কিন্তু পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যেহেতু এটা ধর্ম সম্পর্কিত বিষয় তাই এখানে রাজ্য সরকারই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরপর নিজের দাড়ি পাকাপাকিভাবে রেখে দেওয়ার আর্জি নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি লেখেন রিয়াজ। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারাও ধর্মীয় ও মেডিকেল গ্রাউন্ডে দাড়ি রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকেও কোন যথাযথ কারণ দেখিয়ে তার আর্জি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
রাজ্য সরকারের থেকে সাড়া না পেয়ে ২০১৪ সালের জুনে ফের রাজ্য পুলিশের প্রধানের কাছে চিঠি লেখেন রিয়াজ। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় রিয়াজের দাড়ি রাখার অনুরোধ মানা যাবে না।
পিটিশনে রিয়াজ জানান, ‘রাজ্যের পুলিশ আইনে এমন কোন শর্ত নেই যে দাড়ি বড় করা যাবে না। তবু তাকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে’। তার অভিযোগ সংবিধানের ১৪, ১৫, ১৯(১)(এ) এবং ২৫ নম্বর ধারা (সমান চোখে দেখা ও স্বাধীতার অধিকার) অনুযায়ী তার দাড়ি বড় রাখার আর্জি খারিজ করাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। কেরালা রাজ্য পুলিশের ডিজি’র কাছ থেকে দাড়ি বড় রাখার আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরই গত সোমবার কেরালা হাইকোর্টের মামলা করেন রিয়াজ।
সূত্র: বিডি-প্রতিদিন