সাহিত্য ডেস্ক: ভারতের খ্যাতিমান সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী আর নেই। পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ, জ্ঞানপীঠসহ একাধিক পুরস্কারপ্রাপ্ত এ লেখক বৃহস্পতিবার কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুর আগে তিনি পার করেছেন উননব্বইটি বসন্ত।
দীর্ঘদিন ধরেই নানা রোগে ভুগছিলেন এই লেখিকা। অসুস্থ ছিলেন ফুসফুসের সংক্রমণে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
১৯৭৯ সালে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। অরণ্যের অধিকার উপন্যাসের জন্য ওই পুরস্কার পান তিনি।
পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ, জ্ঞানপীঠসহ একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন সাহিত্যিক। বঙ্গবিভূষণ সম্মানেও সম্মানিত করা হয় তাঁকে।
ভারতে সাহিত্যিকদের শ্রেষ্ঠ সম্মান জ্ঞানপীঠ তিনি পান ১৯৯৬ সালে।
১৯২৬ সালের ১৪ জানুয়ারি ব্রিটিশ-শাসিত অবিভক্ত ভারতের ঢাকায় জন্ম হয় মহাশ্বেতা দেবীর। তাঁর বাবা ছিলেন কল্লোল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিখ্যাত কবি মনীশ ঘটক।
বিখ্যাত চিত্রনির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ভাইঝি ছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। তাঁর স্বামী নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যও ছিলেন ভারতে আইপিটিএ আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।
প্রথম জীবনে সাংবাদিকতার পাশাপাশি তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পনীতি সমালোচনা করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কলম ধরেছিলেন মহাশ্বেতা দেবী।
তাঁর লেখা হাজার চুরাশির মা, তিতুমীর, অরণ্যের অধিকার অবিস্মরণীয় রচনা হিসেবে বাংলা সাহিত্যে স্বীকৃত। তাঁর লেখা উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ‘রুদালি’-র মত কালজয়ী সিমেনা।
পরবর্তীকালে তিনি বামপন্থী রাজনীতির আন্দোলনের ধারা থেকে সরে আসেন, রাজ্য-রাজনীতিতে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় তাঁকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা যায়।
সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, ‘এক মহান সাহিত্যিককে হারাল দেশ। বাংলা হারাল মা-কে। আমি আমার অভিভাবককে হারালাম। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি’’।
এই মুহুর্তে দিল্লি সফররত মুখ্যমন্ত্রী মিস ব্যানার্জি তাঁর সফর কাটছাঁট করে মহাশ্বেতা দেবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আজই কলকাতায় ফিরছেন বলে জানা গিয়েছে।
এসএস