হে দয়াময় হে মায়াময় মুহাম্মদ নুরুল হুদা মানুষের জন্যে খুব দয়া হয় মানুষকে মানুষ থাকতে দাও দয়াময় মানুষের জন্যে খুব মায়া হয় মানুষকে মানুষ থাকতে দাও মায়াময় মানুষেরা অমানুষ হয়ে গেলে শুধু মানুষেরই ক্ষয় হয় মানুষকে মানুষ থাকতে দাও দয়াময় মানুষেরা অমানুষ হয়ে গেলে শুধু পশুদেরই জয় হয় মানুষকে মানুষ থাকতে দাও দয়াময় ভয় হয়, খুব ভয় হয় মানুষকে মানুষ থাকতে দাও দয়াময় মানুষকে মানুষ থাকতে দাও মায়াময় খুন ফরিদ কবির করো চলাফেরা ধমনিতে, উপশিরায়, শিরায় এই স্রোত চলুক নির্জনে আমাকে রঞ্জিত করে আপাদমস্তক তুমি বয়ে চলো টগবগ ফুটতে থাকো হৃদয়ে, মস্তিস্কে আমাকে পুড়িয়ে দাও তোমার গরমে বল, কেন হলে তুমি এতোটা আগ্রাসী! মিশে যাচ্ছ রক্তের প্রচণ্ড লালে, শুভ্র কণিকায় ছুটে যাচ্ছ শরীরের আনাচে-কানাচে! তোমাকে ছিনিয়ে নিতে এখন তৎপর ভয়ঙ্কর আলপিন, ঘাতক ছুরিও... গোপনে তোমাকে বলি- তোমার একটা ফোঁটাও আমি কাউকে দেব না... মুকুরবিলাস ওবায়েদ আকাশ আমার দুঃখের দিনে বালিহাঁস নাচিয়েরা দলে দলে ফিরছে কোথায়? মাদারের ডাল ভেঙে প্রকৃতিকে জব্দ করো খুনোখুনি হতে হাঁড়ি মুখে বসে আছে সারি সারি মোমের পুতুল উল্কিগুলো উড়ে গেল কেঁদেকেটে মৃত এক তরুণীর মুখে ছায়া দেখে ভেঙে ফেল মুকুরবিলাস মাঝি আমি একা একা দণ্ড নিয়ে ঘুরি এই ঘাটে নোঙরের ইচ্ছে কিছু নাই? তোমার প্রতি মুসা আল হাফিজ এই সুহাসিনী চাঁদ তোমার মুখের চেয়ে মোহনীয় নয় এই অমাবস্যার বন তোমার কেশের চেয়ে অন্ধকার নয় তোমার আচলের মেঘে জ্বলজ্বল করছে দশটি অঙ্গুলির শূভ্রশিখা তোমার দৃষ্টিতে আছে পৃথিবীর সেরা মৌচাক ভ্রুলতার গোপন তরবারি তাকে পাহারা দিচ্ছে! তোমার হাসির ভেতর তিন লক্ষ গোপন তিরন্দাজ ধনুক ছাড়াই তারা বিদ্ধ করে বীরের হৃদয়! তোমার বুকের ভেতর নিখিলের জীবন জমে আছে তোমার দুগ্ধে আছে অস্তিত্বের সার তোমার রক্ত থেকে সভ্যতার ভ্রুণ তোমার কপোলে একটি অনুপম পাণ্ডুলিপি লুকিয়ে আছে তার প্রতি পৃষ্ঠায় পরমের নিপুন শিল্পকলা তুমিহীন এই ঘর খাঁ খাঁ গোরস্তান তুমিহীন এই হাওয়া জীবনের অস্থিরতা তুমিহীন এই প্রহর শূন্যতার দারিদ্রে নীলিমাভর্তি দীর্ঘশ্বাস তুমিহীন রাত শোকের তরঙ্গশিরে বিপন্ন ভেলা তুমিহীন দিনে কাদেন আদম অবিরত তুমিহীন পৃথিবী মৃত্যুর চাদরে মোড়া স্বপ্নহীন জন্জাল পরাজিত হয়ো না নারী! তুমি যদি হেরে যাও, পৃথিবীটা হয়ে যাবে আইয়ুবের বিলাপ ফুলের বাগান হবে নিথর শোকসভা ঘাস হয়ে যাবে হলুদ পাখিরা মাতম ছাড়া সব গান ভুলে যাবে! দ্যাখো, শুয়োরের বাচ্চারা তোমার সীমান্তরেখায় জড়ো হচ্ছে ... তোমার পরাজয় ছাড়া কিছুতেই তারা তৃপ্ত নয় তোমার ঐশ্বর্যকে আগলে রাখা অমীয় পতাকার দিকে ওদিক থেকে ধেয়ে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে তীর সামলাও বিজয়িনী, সামলাও! দুঃখ কি তবে গৃহপালিত অসুখ আশরাফ জুয়েল দুঃখের বিবর্ণ আঁচড়গুলো শোকাশ্রয়ী, বিলীন হয় না- হৃদয় আকাশে লেপটে থাকে ক্ষীণতর সুতোর মত, গ্রীষ্মের ক্ষীনাঙ্গী ঝরনার মতো কেঁদে চলে অনবরত, ভাটি প্রবণ ক্ষয়িষ্ণু ইচ্ছেদের সাথে মিলিত হবার ইচ্ছায়। কান্না বিলাসী সময় ইচ্ছার পশমে এঁকে দেয় ক্ষীয়মাণ ক্রন্দসী’র বিষণ্ণ মুখ- অথচ সেই মুখশ্রীতেই পোঁতা ছিল বিশল্যকরণীর ঠিকানা, তবে কি বিম্বিত দুঃখ মেনে নিতে প্রস্তুত মানসপ্রতিমা’র স্থিরতাকে? শাপভ্রষ্ট রক্তবীজে সয়লাব ভূ-চিত্রাবলী’র বায়বীয় কাঠামো, ধন্বন্তরি সলতে হারিয়ে গেছে শ্বেতপাথরের পেটে, গ্রীবা-মুখে স্পষ্টতর দুঃখের বিবর্ণ আঁচড়। দুঃখ কি তবে গৃহপালিত অসুখ? /এসএস