টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে গত ১৭ ডিসেম্বর সাদপন্থী কর্তৃক হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ ও তাবলীগের সাথীবৃন্দ।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুফতি আমানুল হক। বক্তব্যে বলা হয়, সাদ অনুসারীগণ বর্তমান সরকারকে বৈষম্যবিরোধী বলে অভিযুক্ত করছেন। অথচ বর্তমান সরকার তবলীগের বিষয়ে কোনভাবেই কোন বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত প্রদান করেন নি। সাদ অনুসারীগণ কর্তৃক বারবার সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে অন্ধ সাদ অনুসারীদের নিষিদ্ধ করার আন্দোলন চলছে। সেখানে দেশে শান্তি শৃংখলা রক্ষার্থে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী এজতেমায় সাংঘার্ষিক অবস্থা ঠেকাতে সাদ পন্থীদের অনুমতি না দিয়ে অন্য কোন জায়গায় তাদের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দেয়াকে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করা হাস্যকর।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, গত ১৮ ডিসেম্বর সাদপন্থিদের সাথে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা কেন্দ্রিক সরকারের পূর্ব নির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিল। বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে সাদ অনুসারীদের জানানোও হয়েছিল। ফলে আমরা ও আমাদের (শুরায়ী নেজাম তথা জোবায়েরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত) সাথীগণ তাদের হামলা না করার বিষয়ে নিশ্চিত ছিলাম। এই সুযোগে রাতে ২ হাজার নিরস্ত্র সাথীদের উপর প্রায় ৩০ হাজার সশস্ত্র সাদপন্থীগন এক তরফাভাবে ইজতেমা মাঠে ঢুকে হামলা চালায়, এতে আমাদের ৪ জন সাথী নিহত ও শতাধিক আহত হয়।
পরদিন মন্ত্রণালয়ে মিটিংয়ে তাদের এক তরফা হামলাকে উপদেষ্টা পরিষদ ও সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন স্বীকার করে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। ঐ সময় আমরা জোরালো ভাবে জানিয়েছি এই মাঠে সাদপন্থীদের ইজতেমা করার কোন অধিকার নেই। পরবর্তীতে সরকার সময় স্বল্পতার কারনে ও বিদেশী মেহমানদের সম্মানরক্ষার্থে শুধুমাত্র এ বছর তাদেরকে এজতেমা করার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য আমাদের অনুরোধ জানাতে থাকে। যা বাস্তবায়ন করার জন্য সরকার আগামী বছর থেকে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীরা কোনো তবলীগী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না এ শর্তে ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারী এজতেমা করার অনুমতি প্রদান করেন। অথচ সাদপন্থীরা প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ না করে বৈষম্য শব্দ ব্যবহার করে সহানুভূতি নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, এছাড়া ওয়াসিফুল ইসলামের বিতর্কিত ছেলে ওসামা ইসলাম কর্তৃক প্রচারিত পরিপত্রের মূল গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দিয়ে স্বীয় স্বার্থে তার ফেসবুকে প্রচার শুরু করে দিয়েছে, যা সরকারী সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করার শামিল। আমরা এর জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আগামী ৩ দিনের মধ্যে উক্ত বিষয়ে ভুল স্বীকার করে প্রত্যাহারের জন্য আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এছাড়া ডিসেম্বর মাসের সরকারী প্রজ্ঞাপনে ভুলক্রমে সহবস্থান শব্দটি ব্যবহার করে সকল জেলায় যে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা সংশোধন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
হাআমা/