রাজধানীর বনানী থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) ও ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক শেখ সোহেল রানা লেবাননে আটক হয়েছেন। ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তাকে আটক করে বলে জানা গেছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের ফাঁদে ফেলে ৫৪৭ জন গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে। এর আগে ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি প্রতারণার অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক শেখ সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চান হাই কোর্ট। ওইদিন শুনানিতে আইজিপির প্রতিবেদন তুলে ধরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে। ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি পাওয়া তথ্য অনুসারে- ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে তিনি তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে প্রেসিডেন্সি কারেকশনাল হোম আলীপুরে আটক ছিলেন। জামিন নিয়ে পরে সেখান থেকে সোহেল রানা পালিয়ে গেছেন। জানা যায়, কাফেলো নামে পর্তুগালের এক নাগরিক সোহেল রানার বন্ধু। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে পর্তুগালের ভিসা নিয়ে ওই দেশে পালিয়ে যান সোহেল রানা। সেখান থেকে তিনি পরে লেবাননে চলে যান। জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোলের শাখা কার্যালয় ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি আলী হায়দার চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, লেবাননে সোহেল রানা আটকের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।
সূত্র জানায়, লেবাননে পুলিশের একটি টিম পাঠাতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ সদর দপ্তরের সমন্বয়ে একটি টিম পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নোটারি করে পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে ৭ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সোহেল রানার যত সম্পদ : পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী- রাজধানীর শাহজাদপুরে একটি, গুলশান মডেল টাউনে একটি, নিকেতনে দুটি ও ভাটারা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট আছে সোহেল রানার। গুলশানে একটি বাণিজ্যিক ভবনে ৯ কোটি টাকায় স্পেস (জায়গা) কিনেছেন তিনি। এ ছাড়া ভাটারা ও পূর্বাচলে সোহেল রানার দুটি প্লট এবং গুলশান ও উত্তরায় তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া গেছে। ঢাকার বাইরে নিজ জেলা গোপালগঞ্জ এবং খাগড়াছড়িতে তিনি জমি কিনেছেন বলে জানা যায়।
তবে সোহেল রানার এই বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ নিয়ে পুলিশ অনুসন্ধান করার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পরে সেটা আর এগোয়নি। এ ছাড়া থাইল্যান্ডের পাতায়ায় সুপারশপ, জমি ও ফ্ল্যাট; পর্তুগালের লিসবনে সুপারশপ, বার ও রেস্তোরাঁ; ফিলিপাইনের ম্যানিলায় বার এবং নেপালের কাঠমান্ডুতে সোহেল রানার একটি বার ও ক্যাসিনো আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
আরএইচ/