|| খাদিজা ইসলাম ||
রমজান মাসে পৃথিবীর সকল মুসলমান সাওম পালন করে। এ সময় মুসলমানদের মানসিক অবস্থা পরিবর্তন হয়। সবাই আল্লাহমুখি হয়। বেশি বেশি ইবাদত করে। রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাস এবং খাবার গ্রহণের সময়ের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে দৃষ্টি রাখা উচিত। ইফতার-সেহরিতে সঠিক খাবার গ্রহণ করলে শরীর ভালো থাকবে। রোজা রাখতে কষ্ট হবে না। শরীর ভালো থাকলে ইবাদতেও মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়। তাই রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাসের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
চলুন, জেনে নিই- রমজান মাসে স্বস্থকর খাবারের মধ্যে কী কী খাদ্য রাখা যেতে পারে:
১. ইফতারে লেবুর শরবত: ইফতারে লেবুর সরবত পান করা খুব উপকারি। তবে লেবুর সরবতে রঙ মেশানো উচিত নয়। কেননা রঙ মেশানো সরবত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
২. ভাজা-পোড়া, অতিরিক্ত মশলাযুক্ত বা চটকদার খাবার ইফতারের একেবারে রাখা উচিত নয়।
৩. ইফতারে অবশ্যই খেজুর রাখা। কারণ খেজুর ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এছাড়াও খেজুর হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৪. হজমযুক্ত তরল জাতীয় খাবার রাখা।
৫. ইফতারে ছোলা রাখা। ছোলার শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম, যা শরীরে প্রবেশ করলে অস্থির ভাব দূর হয়। ছোলা খাওয়ার পর বেশ অল্প সময়েই হজম হয়। ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ। এ আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্যে উপকারী। ছোলা দীর্ঘক্ষণ ধরে শক্তির জোগান দেয় শরীরে।
৬. হালিম রাখা যেতে পারে। হালিমে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে, যা স্বাস্থের জন্য বেশ উপকারী।
৭. সবজি, চিকেন, ডাল ও চাল দিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে খিচুড়ি রান্না করা যেতে পারে।
৮. পরিমিত ঘুম, রমজান মাসে অবশ্যই পরিমিত ঘুমাতে হবে। এতে শরীর মন দুটোই ভালো থাকবে।
৯. সেহরিতে সুষম খাদ্য রাখা। আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকলে তা দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারাদিন আপনার দেহে শক্তি জোগাবে। মাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুধজাত খাবার, ডিম, ডাল প্রভৃতি খাবার প্রোটিনের ভালো উৎস।
১০.অধিক পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করা। খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি শরীরকে আর্দ্র রাখবে এবং পানি পিপাসা মেটাতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া ইফতার ও সেহরিতে মাঝামাঝি সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
খাদ্যাভ্যাস ঠিক থাকলে রমজান মাসে আমাদের রোজ রাখা সহজ হবে। এ সময় প্রতিটি ইবাদত আনন্দের সহিত হওয়া উচিত। ইফতারে, সাহরিতে খাবার গ্রহনের উপর শারিরিক সুস্থতা নির্ভর করে। খাদ্যাভাস ঠিক থাকলে শরীর সুস্থ থাকবে, প্রশান্তি নিয়ে ইবাদত করা যাবে। রমজান মাসে আনন্দের সাথে বেশি বেশি ইবাদত খাদ্যাভাসের প্রতি যত্নবান হওয়া জরুরি।
এমএইচ/