ইসরায়েলে বসবাসরত একই পরিবারের ৫ জন সহ ৬ ফিলিস্তিনি নাগরিককে দুটি পৃথক বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করেছে অস্ত্রধারীরা। চলতি বছরে এ পর্যন্ত দেশটিতে ১৮৮ জন সংখ্যালঘু ফিলিস্তিনিকে হত্যা হয়েছে বলে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।
পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নাজারেথের উত্তর-পশ্চিমে বাসমত তাবুন শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে তিন পুরুষ ও দুই নারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তারা ঘটনাটিকে অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করে সন্দেহভাজনদের তদন্ত করছে বলে জানায়। এর আগে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মুখোশধারী বন্দুকধারীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের আরেক ফিলিস্তিনি নাগরিককে হত্যা করে। তিনি নিকটবর্তী উপকূলীয় শহর হাইফাতে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। ফিলিস্তিনিরা এবং অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো বলছে ইসরায়েল সরকার দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে উদাসীন রয়েছে।
আব্রাহাম ইনিশিয়েটিভস অনুসারে বুধবারের প্রাণহানির ঘটনায় চলতি বছরের শুরু থেকে বর্তমান সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত ফিলিস্তিনি নাগরিকের সংখ্যা ১৮৮ এ পৌঁছেছে।এসব হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, তাদের শহর এবং আশেপাশের এলাকায় পুলিশ ব্যবস্থার ইচ্ছাকৃত অবহেলা অপরাধীদের এবং মাদক ব্যবসায়ীদের লাগাম মুক্ত করে দিয়েছে। আরব জনগোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত মেয়র, সরকার ও পুলিশের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে আরব সম্প্রদায়কে অবহেলা করা ও অপরাধীদের দায়মুক্তি দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে তারা। উল্লেখ্য, ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি নাগরিকের সংখ্যা ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ। তারা দীর্ঘদিন ধরে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সরকারের অবহেলার শিকার। দেশটির উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী, ইতামার বেন-গভির, গত বছরের শেষের দিকে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের অপরাধ দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
আব্রাহাম ইনিশিয়েটিভস গ্রুপের তথ্যমতে, এই বছর অনুরূপ মামলার ১০ শতাংশেরও কম সমাধান করা হয়েছে। সহিংসতার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে পুলিশের উদাসীনতা এবং পুলিশের প্রতি ফিলিস্তিনিদের অবিশ্বাস উভয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রুপের পরিচালক থাবেত আবু রাস বলেন, দেশটিতে মানুষ বাইরে যেতে ভয় পায়। সংখ্যালঘু ফিলিস্তিনিদের জন্যে এই অঞ্চলটিতে এখন খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি। তবে, বেন-গভির তাঁর বিরুদ্ধে আনা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, যেকোনো অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই তাঁর অন্যতম শীর্ষ এজেন্ডা।
এম আই/