মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর পাকিস্তানের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের দাবি, তারা এই অভিযানে পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তায়েবার ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, এই হামলায় বেসামরিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এতে অন্তত আটজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানায়, বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান কার্যালয় ও মুরিদকে শহরে লস্কর-ই-তায়েবার আস্তানায় হামলা চালানো হয়। মোট নয়টি স্থাপনায় আঘাত হানা হয়, যার মধ্যে তিনটি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুজাফফারাবাদ, বাগ ও কোটলি।
এই ঘটনার পরপরই পাল্টা জবাবে রাতেই ভারতের পাঁচটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সকাল থেকে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। এতে ২ শিশু ও ১ নারীসহ অন্তত ৭ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে পিটিআই। বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মৃত্যুর সংখ্যা ১০ বলে দাবি করেছে। আহত হয়েছেন আরও ৩৮ জন।
এদিকে এমন উত্তেজনাকর মুহূর্তে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক পেজে ভেসে ওঠে একটি পুরোনো ভিডিও, যেখানে জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে ২০১৯ সালে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলেছিলেন,
“যদি দুই দেশের মধ্যে সাধারণ যুদ্ধ শুরু হয়, তবে যে দেশটি তার প্রতিবেশীর তুলনায় সাত গুণ ছোট, সে কী করবে? আত্মসমর্পণ নাকি স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই? আমি বিশ্বাস করি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।”
এই ভিডিওর মাধ্যমে দাবি করা হয়, বর্তমান সংকট মোকাবেলায় ইমরান খানের নেতৃত্ব পাকিস্তানের জন্য অপরিহার্য। ফেসবুক পোস্টে তার কারামুক্তির আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘এই ইমরান খানই পারেন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে। এখনই সময় তার উপদেশ শোনা ও তাকে মুক্ত করে পাকিস্তানের বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষা করার।’
ইমরান খান বর্তমানে কারাবন্দি অবস্থায় আছেন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তার দল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), এখনও সবচেয়ে বড় জনসমর্থন পাওয়া রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এমএইচ/