কওমি সনদ কার্যকরে দেশ সমৃদ্ধ হবে
প্রকাশ:
৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৫৬ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| মাসউদুল কাদির || প্রথমত ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ। তারা ভুল করে একটি সত্যকে সামনে এনেছেন। বাংলাদেশের জন্ম ৫০ বছরের উপরে চলল। এখনো কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার কোনো মান নেই। নামের কোনো মানের আদৌ প্রয়োজন আছে কি না তা ভাবনীয়। সনদ কার্যকারিতার সময় ফুরিয়ে যায়নি। কওমি মাদরাসা শিক্ষা সিলেবাসের ফাঁক-ফোকর দিয়ে আলিয়া কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে অনেকে ব্যক্তিজীবনকে রাঙিয়েছেন। আশার আলো তৈরি করেছেন। লেখালেখি, সাংবাদিকতা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা, উপস্থাপনাসহ নান্দনিক অনেক কাজে নিজেদের যুক্ত করেছেন। সক্ষমতার সঙ্গে কাজের সাক্ষর রেখেছেন। কওমি সনদের কার্যকারিতা নেই বলে আদতে কেউ থেমে থাকেনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলে যাচ্ছেন মেধাবীরা। হ্যাঁ, আপনি কার্যকর সনদের কথা বলছেন, তা খুবই জরুরি। কওমি শিক্ষা সিলেবাস এতই ঠুনকো নয় যে, কেবল সনদ কার্যকারিতার কারণে তা বাধাগ্রস্ত হবে! সনদ একটি সম্মান, অধিকার, পরিবারের জন্য পরম পাওয়া একটি বিষয়। রাষ্ট্রের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই। একটি গোপন ভেদ বলে রাখি- যাদেরকে নিয়ে এই ভয় এতদিন ধরে করে আসছেন, এরা আর কেউ কওমিতে নেই। নিজেরা আখের গুছিয়েছে। সনদের ক্ষেত্রে রাজনীতির প্রলেপ মাখানো অন্যায়। রাজনীতির সূ্ক্ষ্ম চালে শিক্ষা বেহালে। রাজনীতি ও শিক্ষার পথ অভিন্ন হলেও তবে পথচলা সুখকর নয়। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য, অর্থনৈতিক পরিত্রাণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কওমিতে জব সিকিউরিটি বলতে কিছু নেই। জব সিকিউরিটির জন্য বিধান জরুরি। দায়িত্বশীল বললেন, আপনি কৃষক লিখে দিয়ে দেন। তাই হলো। আমার মনে পড়ে আমি দেখেছিলাম, এনআইডি কার্ডে এই মাওলানার শিক্ষাগত যোগ্যতায় কৃষক লেখা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কওমি মাদরাসার সন্তানেরা অভূতপূর্ব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সনদ অকার্যকর হওয়ার কারণে তারা অন্যদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। এটা নিতান্তই জুলুম। এ জুলুমের বাতাবরণ দেশের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অযোগ্যরা বসছে। এর জন্য কারা দায়ী থাকবে? মেধাবীরা বিসিএস ক্যাডার হলে, ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হলে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক হলে-এমনকি পুলিশ, বিডিয়ার, আর্মি বা অন্য যেকোনো জায়গায় দায়িত্ব পালন করলে কি ধর্মের কোনো জাত চলে যাবে? দেশের কল্যাণের জন্য একজন আলেম যেকোনো কাজ হাতে নিতে পারেন। তিনি যদি দুর্নীতি পরায়ন না হন, ঘুষচর্চা না করেন, সৎ কাজের আদেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে মানুষকে বিভক্ত রাখেন, এতে তো ক্ষতির কিছু নেই। রাষ্ট্রে এমন দায়িত্বশীল কর্মচারীর অনেক প্রয়োজন। আপনি বলবেন, আমরা রিজাল তৈরি করছি। হ্যাঁ, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিরাও একেকজন বড় বড় রিজাল ছিলেন। তারা সমাজের কোনো কাজ থেকেই নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখেননি। বিপন্ন মানসিকতার পথ পরিহার করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কুরআন ও সুন্নাহয় রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চাইলে দেশের প্রয়োজনেই আমাদের সবার আগে গড়ে ওঠা দরকার। কওমি সন্তানের সামনের সব বাধা কেটে দিই। গড়ে ওঠি, গড়ে তুলি। লেখক: আলেম সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এমএইচ/ |