শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ ।। ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২৬ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত  মজলিসে আমেলার বৈঠকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ‘ড. ইউনূসকে পদত্যাগ করালে বিপ্লবী সরকার গঠন করবে ছাত্র-জনতা’ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অর্থবহ সমাধান আসবে: জামায়াত আমির নোয়াখালীতে আন-নুর হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা লন্ডনে শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্টদের ৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তি জব্দ প্রধান উপদেষ্টার যেসব চাপে থাকার কথা জানালো নিউইয়র্ক টাইমস হজে গিয়ে অসুস্থ ১১১ বাংলাদেশি, হাসপাতালে ৩০ ইসলাম গ্রহণের পর জবি শিক্ষার্থীর হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান – "একবার কুরআন পড়ুন" সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা

পীর-বুযুর্গ ও নবীদের উসিলায় দোয়া করা বিষয়ে দেওবন্দের ফতোয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সারিব সুইজা: ব্যক্তি জীবনে আমরা সবাই প্রিয় প্রভূর মুখোপেক্ষী। তার দয়া ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও টিকে থাকা দায়। আর তার দয়া গ্রহণের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো কাছে ভিক্ষা চাওয়া, দোয়া করা। আমরা অনেক সময় নিজের দোয়াকে আল্লাহর কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য করতে বিভিন্ন অসিলার মাধ্যমে দোয়া করে থাকি। ইসলাম কি এ বিষয়টিকে সমর্থণ করে? এ বিষয়ে জানতে বিশ্বখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দে প্রশ্ন করেছিলেন একজন ভারতীয় মুসলিম নাগরিক।

তিনি তার প্রশ্নে বলেন, সম্মানিত মুফতি সাহেব! আমি দোয়া করার সময় দোয়ার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে নানা সময় কারো উসিলায় দোয়া করে থাকি। দোয়া করার সময় কারো উসিলা দিয়ে দোয়া করা কি ইসলাম সমর্থণ করে? যেমন যদি বলা হয়- ‘হে আল্লাহ! গরিবে নেওয়াজের উসিলায় আমার দোয়া কবুল করুন। অথবা বলা হয় নবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উসিলায় আমার দোয়া কবুল করুন।

এ প্রশ্নে জবাবে দারুল উলুম দেওবন্দের অভিজ্ঞ ফিকহা বোর্ড জানায় যে, নবী-ওলীদের উসিলা দিয়ে দোয়া করা শরীয়তে জায়েজ আছে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উসিলা দিয়ে দোয়া করা বৈধ ও উত্তম কাজ। এমনিভাবে সাহাবা-তাবেয়ীসহ আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিদের উসিলা দিয়েও দোয়া করা বৈধ।

উসিলার দুটি অর্থ রয়েছে-

এক. সরাসরি মাধ্যম গ্রহন। (আল্লাহর দরবারে দোয়া গৃহিত হওয়ার জন্য গাইরুল্লাহকে আল্লাহর সহকারী মনে করে তাদের কাছে সাহায্য ও সুপারিশ চাওয়া এবং তাদের কারো কাছে আশা পূরণের আবেদন করা, আল্লাহ ও নিজের মাঝে মধ্যস্থতাকারী মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করা যেমনটা কাফেররা তাদের দেবতাদের ক্ষেত্রে গ্রহন করতো)

দুই. বরকতময় সত্ত্বা ও গুনের দোহাই দেয়া।

১ম অর্থে উসিলা গ্রহন সর্বসম্মতিক্রমে অবৈধ। আমাদের ফকীহ মুজতাহিদরা ওই মাসআলাটা মূলত ‘ইস্তিগাছা’ শিরোনামের অধীনে আলোচনা করেছেন।

২য় অর্থে উসিলা বৈধ। কারন তখন ‘হে আল্লাহ, রাসুলের উসিলায়/আউলিয়াদের উসিলায় আপনি আমাদের কবুল করে নিন’ বলার অর্থ হচ্ছে, ‘হে আল্লাহ, রাসুল (সা.) আপনার প্রিয় এবং আমরা আপনার সেই প্রিয়জনকে ভালোবাসি। আপনার প্রিয়জনও আমাদেরকে ভালোবাসতেন। আপনার প্রিয়জনের প্রিয়জন হিসেবে, অনুগত উম্মত হিসেবে আমাদের ওপরে রহম করুন, আমাদের দোয়া কবুল করুন।

অর্থাৎ আমরা আপনার অনুগত ও প্রিয় বান্দা হিসেবে আপনার ওলীদেরকে ভালোবাসি। আপনার প্রিয় বান্দাদের প্রতি এই ভালোবাসার উসিলায় আপনি আমাদের দোয়া কবুল করুন।’

এই সূরতে (অর্থাৎ দ্বিতীয় অর্থে) গাইরুল্লাহের সাহায্য নেয়া হচ্ছেনা বরং হুব্বে রাসূলের/হুব্বে আউলিয়ার দোহাই দেয়া হচ্ছে। সহীহ হাদিসের আলোকে হুব্বু ফিল্লাহ হিসেবে যা মূলত ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আর ইবাদতের দোহাই দিয়ে দোয়া করা বুখারীর হাদিসের আলোকে বৈধ!

একবার হযরত ওমর ফারুক (রা.) দুর্ভিক্ষের সময় হযরত আব্বাস (রা.)-এর উসিলা দিয়ে বৃষ্টির জন্য দোয়া করেছিলেন। তাছাড়া হযরত উমাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত যে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম নিজে ফকির ও মুহাজিরদের উসিলা দিয়ে যুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য দোয়া করেছেন। আরো অনেক হাদিস দ্বারাও উসিলা দেওয়ার কথা প্রমাণিত আছে। (আবু দাউদ শরীফ, ৪৩৯)

বর্তমান ফিতনা-ফাসাদের যুগে মানুষদের মধ্যে আকিদার জ্ঞান না থাকায় অনেকে এমন এমন কথা বলে, যাতে ঈমান চলে যাওয়ার আশংকা থাকে। অনেক পীর-বুজুর্গকে সমস্যা সমাধানকারী বিশ্বাস করে। তাদের কাছে প্রার্থনা করে অনেকে বহক্কে গরিবে নেওয়াজ বলে দোয়া করে থাকে। অথচ এভাবে দোয়া করা নিষেধ।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ