বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

যে কারণে ইসলাম গ্রহণ করেন মোহাম্মদ আলী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ক্রীড়াজীবনের শুরুর দিকেই কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী রিংয়ের ভেতরে ও বাইরে অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তিনি আমেরিকান মুসলিমদের আদর্শ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।

এক চিঠিতে মোহাম্মদ আলী তাঁর ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণ বর্ণনা করেছেন। তিনি কেন মুসলিম হলেন, তা একটি কাগজে আলীকে লিখে রাখতে বলেছিলেন তাঁর স্ত্রী বেলিন্দা। এরপরই তিনি বেলিন্দার জন্য ওই চিঠি লেখেন।

আলী চিঠিতে লুইসভিলেতে তাঁর কৈশোরের কথা উল্লেখ করেন। তখন তাঁর নাম ছিল ক্যাসিয়াস ক্লে। তখন রাস্তা দিয়ে স্কেটিং করার সময় ফুটপাতে কোনো সুন্দরী নারী হেঁটে যাচ্ছে কি না, তা নজরে রাখতেন তিনি। আর এটি করতে গিয়েই মুসলিম সংগঠন ‘নেশন অব ইসলাম’–এর পক্ষে পত্রিকা বিক্রি করতে দেখেন এক ব্যক্তিকে। ওই সংগঠন ও সংগঠনটির নেতার বিষয়ে আলী আগে থেকেই শুনেছিলেন। তবে ওই সংগঠনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি তিনি তখন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেননি। সংগঠনটি ইসলামের আলোকে আত্মোন্নয়ন ও কৃষ্ণাঙ্গদের বিচ্ছিন্নতার কথা প্রচার করত।

ভদ্রতার খাতিরে আলী একদিন ওই সংগঠনের পত্রিকা কেনেন। পত্রিকায় প্রকাশিত একটি কার্টুন তাঁর নজরে আসে। কার্টুনে দেখা যায়, এক শ্বেতাঙ্গ মালিক তাঁর কৃষ্ণাঙ্গ দাসকে মারধর করছেন এবং যিশুর কাছে প্রার্থনা করার জন্য ওই দাসকে চাপ দিচ্ছেন। কার্টুনের বার্তা ছিল—শ্বেতাঙ্গরা তাঁদের দাসদের ওপর খ্রিষ্টধর্ম জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে। কার্টুনটি আলীর মনে দাগ কাটে।

চিঠিতে ইসলামের প্রতি আলী কেন আকৃষ্ট হন, তার কোনো আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা দেননি। এ বিষয়টি তিনি বাস্তবতার আলোকেই ব্যাখ্যা করেন। ওই কার্টুন তাঁকে জাগিয়ে তোলে। তিনি বুঝতে পারেন, খ্রিষ্টধর্ম তাঁর পছন্দ নয়। ক্যাসিয়াস ক্লে নামটিও তাঁর পছন্দ নয়। কাজেই তিনি কেন দাসত্ব বয়ে বেড়াবেন?

১৯৬৪ সালে ২২ বছর বয়সে মোহাম্মদ আলী বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন। এরপর আলী জনসমক্ষে খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করার কথা এবং নিজের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহ এবং শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমি শ্বেতাঙ্গ প্রতিবেশীদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করব না। আমি শ্বেতাঙ্গ কোনো নারীকেও বিয়ে করতে চাই না। ১২ বছর বয়সে আমি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হই। তবে আমি কী করছি, তখন তা জানতাম না। আমি আর খ্রিষ্টান নই।’

নেশন অব ইসলামের নেতা এলিজা মোহাম্মদের মৃত্যুর পর সংগঠনটির আমূল সংস্কার করা হয়। এরপর আলী আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন। পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত হলে আলীর কণ্ঠে জড়তা চলে আসে। তবে তিনি মাঝেমধ্যে ধর্মীয় বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনার জন্য তাঁর গুণগ্রাহীদের আমন্ত্রণ জানাতেন।

মোহাম্মদ আলীর জীবনী নিয়ে লেখা গ্রন্থ ‘আলী’র রচয়িতা জনাথন ইগ তাঁর ওই গ্রন্থটি রচনার জন্য আলীর স্ত্রী বেলিন্দার সাক্ষাৎকার নেন। এ সময় বেলিন্দা তাঁকে ওই চিঠিটি দেন। গত বুধবার জনাথন সেটি নিয়ে আফ্রিকান আমেরিকান ইতিহাস ও সংস্কৃতিবিষয়ক জাতীয় জাদুঘরে যান। তাঁর উদ্দেশ্য জাদুঘরের সংগ্রহশালায় চিঠিটি দেওয়া। সূত্র : প্রথম আলো/আরএম


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ