মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

কাসেম বিন আবু বকর নিজের উপন্যাসকে ইসলামী বলতে নারাজ, আমরা কেনো বলবো?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাঈদ কাদির : কাসেম বিন আবু বকর বাংলাসাহিত্যে সিরিয়াস ধারার কোনো গ্রন্থ রচনা করেন নি, এটি করার কথাও তাঁর নয়। কারণটা খুবই পরিষ্কার, তিনি যেহেতু সিরিয়াস ধারার লোক নন, সেহেতু এ ধারায় তাঁর রচনাও থাকবে না; এটাই নিয়ম।

এইটা বুঝতেও কিছু মানুষের জলঘোলা করতে হচ্ছে, বিষয়টা দুঃখজনক। বিষয়টি পরিষ্কার করে বোঝাতে হলে, লেখক ও পাঠকের শ্রেণিবিভক্তিটা আপনাকে বুঝতে হবে।

যারা সিরিয়াস ধারার লেখক তাদের লেখা সর্বাধিক পাঠকপ্রিয়তা পাবে না, এটাই স্বাভাবিক। কারণ সব ধরনের পাঠক তাঁদের লেখা গিলতে পারবে না। সিরিয়াস সাহিত্যের পাঠকরাই তাঁদের লেখা পড়বে। এই শ্রেণির কাছেই তাঁরা সমাদৃত হবেন, পাঠকপ্রিয়তা পাবেন। অর্থাৎ লেখকদের তারতম্যে পাঠক ও পাঠকপ্রিয়তার-ও শ্রেণিবিভাজন থাকবে।

সুতরাং যারা সাধারণ ভাষায়, সাদামাদা উপস্থাপনায়, ধর্মীয় বাস্তবতা অবলম্বনে সমাজের হালচিত্র তুলে আনবেন, তারা মধ্যশিক্ষিত ও মধ্যধার্মিকদের কাছে জনপ্রিয় হবেন, এটা বিচিত্র কিছু নয়। এর মানে এই নয়, কাসেম বিন আবু বকরের উপন্যাসকে আপনার 'ইসলামী উপন্যাস' বলতে হবে।

মনে রাখতে হবে, উপন্যাস কখনো ইসলামী হয় না, উপন্যাস হয় মানুষের জীবন নিয়ে। আর মানুষ যদি মুসলিম হয় আর ধর্মকর্ম পালন করে, তবে তাকে নিয়ে রচিত গল্প-উপন্যাসে ইসলাম ধর্মের নানান প্রসঙ্গ চলে আসবে; এটি স্বাভাবিক।

পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ইহুদী ও খ্রিষ্টান ধার্মিকদের জীবন নিয়ে বহু উপন্যাস লিখেছেন। কই তাদের সেসব উপন্যাসকে তো কেউ ইহুদী বা খ্রিষ্টান উপন্যাস বলে আখ্যায়িত করে না! তাহলে কাসেম বিন আবু বকরের বোরকা পরা সেই মেয়েটিকে কেন ইসলামী উপন্যাস বলতে হবে? বুঝতে হবে, এখানে একটা একপেশে ও একচোখা নীতির চর্চা হচ্ছে।

এটি স্রেফ মূর্খতা আর বিভ্রান্তির টোপ। এখানে আমাদের সাফল্য খোঁজার কিছুই নেই। হয়েছে ব্যক্তি কাসেম বিন বকরের অর্জন। সমষ্টিক কোন অর্জন এখানে নেই। স্বয়ং তিনিই তার লেখককৃতিকে ইসলামের কোন অনুসঙ্গ বা অর্জন বলতে নাখোশ। কারণ তিনি ইসলাম সম্পর্কে জানেনই কম।

কাসেম বিন আবু বকর নির্দিষ্ট শ্রেণির কাছে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তাঁর রচনা সাদামাটা হলেও একদম ফেলনা নয়। তিনি গল্প তৈরিতে বৈচিত্র্য আনতে না পারলেও মধ্যবিত্ত, সাদামাটা ও স্বল্পধার্মিকদের জীবনালেখ্য রচনায় বিশেষ ক্ষমতা তার রয়েছে।

তাঁর গল্পগুলোয় কাল্পনিকতা কম; তাঁর কিছু কিছু গল্প পাঠে বুঝে আসে, তাঁর রচিত গল্পগুলো যেন ঠিক গল্প নয়, বরং আমাদের সমাজের বাস্তবচিত্রকে তিনি উপন্যাস আকারে গ্রন্থিত করেছেন। সমাজে যা ঘটে, তার বাস্তবরূপ তুলে ধরতে তিনি বেশ রক্ষণশীল। তিনি উঠতি বয়সি ছেলেমেয়েদের প্রেমভালবাসাজনিত ব্যাপরগুলো সাহিত্যকলা ঠিক রেখে বর্ণনা করতে না পারলেও সাদামাদা ভাষায় সেগুলোকে তুলে এনেছেন।

আমাদের দেশে সমাজের বাস্তবচিত্র অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয় বলে চলচ্চিত্র নির্মারা বলে বেড়ান। আমরা লক্ষ্য করেছি, দেশের বানিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রগগুলো একেতো মানসম্পন্ন নয়, অন্যদিকে সেগুলোতে সমাজের বাস্তবতাকে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয় ।

-এআরকে


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ