শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বিদেশি সংস্কৃতি চাপানোর চেষ্টা করবেন না: মুফতি ফয়জুল করিম জমিয়তের জাতীয় কাউন্সিলের ৭ নতুন প্রস্তাবনা ‘আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ব্যতিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংহতি বজায় রাখা সম্ভব নয়’ গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেপ্তার এবার যে ২০ ভাষায় অনুবাদ করা হবে হজের খুতবা সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ ৫ বছরের পক্ষেই জামায়াত স্বামীর টাকায় হজ করলে ফরজ আদায় হবে? ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ ৩০ ফিলিস্তিনি, নেই উদ্ধারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পেহেলগামে হামলার স্বচ্ছ তদন্তের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত: শাহবাজ শরীফ জমিয়তের সভাপতি আল্লামা ওবায়দুল্লাহ ফারুক মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি

আ.লীগে সম্মেলন প্রস্তুতি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

awamiligফয়জুল আল আমীন : ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে জাকজমকপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য জাতীয় সম্মেলন চলছে আয়োজনে ব্যাপক প্রস্তুতি। ১০ ও ১১ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য দলটির ২০তম জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনে গঠিত ১১টি উপকমিটি ইতিমধ্যে অনেক কাজ গুছিয়ে এনেছে। সম্মেলনকে সামনে রেখে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে দলের মধ্যে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে নতুন কারা আসছেন, কে কোথায় ঠাঁই পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দাওয়াত পৌঁছানো হয়েছে ১৪টি দেশের প্রায় অর্ধশত নেতাকে। ইতিমধ্যেই সম্মেলনের ডাক দিয়ে এক লাখ পোস্টার ছাপা শুরু হয়েছে। এসব পোস্টারে স্লোগান থাকছে- ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার/এখন সময় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’। আগত কাউন্সিলর ও অতিথিদের আপ্যায়ন, মঞ্চ নির্মাণ ও সাজসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিকিৎসা, শৃঙ্খলা রক্ষা, গঠনতন্ত্র সংশোধন, ঘোষণাপত্র যুগোপযোগীকরণ সহ সম্মেলনের আনুসঙ্গিক কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপকমিটিগুলো ব্যাপক তৎপর রয়েছে।

১১ উপ-কমিটির কাজে ব্যয় হবে ৪ কোটি টাকারও বেশি
আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ১৪ দেশের নেতৃবৃন্দকে

দলীয় সূত্রমতে, উপকমিটির কাজগুলো সম্পন্ন করতে ৪ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হতে পারে। এর মধ্যে মূলত ৫-৬টি উপকমিটির কাজে বেশির ভাগ অর্থ ব্যয় হবে। খাদ্য উপকমিটির কাজে এক কোটি, প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির কাজে ৮০ লাখ, মঞ্চ ও সাজসজ্জার পেছনে এক কোটিরও বেশি, অভ্যর্থনা উপকমিটির কাজে অর্ধ কোটি, স্বাস্থ্য উপকমিটির পেছনে ২০-৩০ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
ব্যয়ের বিষয়ে সম্মেলনের অর্থ উপকমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘বৈঠকে সব উপকমিটির বাজেট পাওয়া যায়নি। আমার শিগগিরই ব্যয়ের হিসেব চূড়ান্ত করে ১১ জুলাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তা দলীয় সভাপতির কাছে উপস্থাপন করব।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দিনের কাউন্সিলের মোট ৩০ হাজার খাবারের প্যাকেট সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়। উদ্বোধনী দিনে ২০ হাজার ও পরের দিন দুই বেলায় ১০ হাজার প্যাকেট সরবরাহ করা হবে। প্রতি প্যাকেটের জন্য ব্যয় হবে ৩০০ টাকার মতো।

জানা গেছে, সম্মেলনের দিন অতিথিদের একটি পাটের ব্যাগে আওয়ামী লীগ সভাপতির বাংলা ও ইংরেজি বক্তব্য, আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে পৃথক প্রকাশনা সরবরাহ করা হবে। ব্যাগে থাকবে উন্নয়ন ও বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস নিয়ে পৃথক ভিডিও সিডি। এ ছাড়া কাউন্সিলরদের সাধারণ সম্পাদকের সাংগঠনিক রিপোর্টের কপি দেওয়া হবে। প্রতিটি প্রকাশনার কোনোটিই ১০ হাজার কপির কম হবে না। সম্মেলনে আগতদের জন্য ব্যাজ, টুপি, পানির বোতল ও হালকা নাশতার ব্যবস্থা করবে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি।

দলীয় সূত্রমতে, সম্মেলনে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির কাজে সবচেয়ে বেশি খরচ হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থলে মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণ, বসার জন্য ৩০-৩৫ হাজার চেয়ারের বন্দোবস্ত করা, উদ্যানের প্রবেশপথগুলোতে ও ঢাকা শহরকে সুসজ্জিত করতে তোরণ নির্মাণে এক কোটি টাকার ওপরে ব্যয় হবে। বিদেশ থেকে আগত অতিথিদের এবারে সোনারগাঁও হোটেলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে ১৪টি দেশের ৪৫ জন নেতাকে ইএমএসের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সই করা আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সম্মেলনে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। অতিথিদের বিমানের বিজনেস ক্লাসের রিটার্ন টিকিট ও বাংলাদেশে অবস্থানকালে থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্তের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। দলীয় প্রধানদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে নিজে উপস্থিত থাকতে না পারলে দলের পক্ষে একজন প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। চিঠিতে ওই তিন নেতার মোবাইল ফোন নম্বর ও ই-মেইল আইডি দেয়া হয়েছে।
অভ্যর্থনা উপকমিটি সূত্রে জানা গেছে, অতিথিদের পাঠানো অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে সম্মেলনের আগের দিন ৯ জুলাই সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজ, ১০ জুলাই সম্মেলন অনুষ্ঠানের পর দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে মধ্যাহ্নভোজ, পরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ও জাতীয় সংসদ ভবন পরিদর্শন, ১১ জুলাই জাতীয় জাদুঘর এবং কয়েকটি গার্মেন্ট ও ওষুধ কারখানা পরিদর্শন, সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নৈশভোজ। ১২ জুলাই অতিথিদের বিদায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোনো অতিথি আরো বেশি সময় অবস্থান করতে চাইলে সেটিরও ব্যবস্থা করবে ক্ষমতাসীন দল।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আমন্ত্রণ জানানো নেতাদের মধ্যে ভারতের ২০ জন রয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি, বিরোধী দল কংগ্রেস, সিপিআইএমসহ বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এমন বেশ কয়েকটি রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা দলের সভাপতিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ, কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, সিপিআইএম নেতা প্রকাশ কারাত ও সীতারাম ইয়েচুরি, পশ্চিমবঙ্গের সিপিআইএম নেতা বিমান বসু, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব¬কের প্রধান দেবব্রত বিশ্বাস, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএম প্রধান মানিক সরকার, ত্রিপুরা কংগ্রেসের সভাপতি আশীষ কুমার সাহা, আসাম ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা জয়ারাম, আসাম গণপরিষদের প্রফুল্ল কুমার মহন্ত, দিল্লির আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দাওয়াত পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মণিপুর পিপলস পার্টি, নাগাল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট, মেঘালয়ের ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, অরুণাচল কংগ্রেস, মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট, বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির সভাপতিকে।

সূত্রমতে আরো আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি, যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টি, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টি, অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টি ও রিপাবলিক পার্টি, জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জার্মানি ও ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন, কানাডার কনজারভেটিভ পার্টি ও নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি, রাশিয়ার ইউনাইটেড রাশিয়া ও রিপাবলিকান পার্টি অব রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস ও ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স, জাপানের ডেমোক্রেটিক পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি ও নেপালি কংগ্রেস, শ্রীলঙ্কার ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি ও আইটিএকে এবং মালয়েশিয়ার ইউএমএনও, পিপলস জাস্টিস পার্টির প্রধানকে ।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম / আরআর


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ