শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২১ শাওয়াল ১৪৪৬


সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবীতে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিতর্কিত সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ঘোষণা ও ফাসীর দাবীতে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উলামা পরিষদ ও তাবলীগের সাথীরা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী ইসলামের শান্তির বাণী পৌছে দেওয়া এবং উত্তম চরিত্র ও নীতিনৈতিকতার প্রচারক হিসেবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম হল তাবলীগ জামাত। প্রায় শতাব্দিকাল যাবৎ এই জামাতের মাধ্যমে সাধারণ মুসলিমরা নিজেদের জান-মাল ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে দ্বীনের দাওয়াতের কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুদিন যাবত মৌলভী সাদ কান্ধলভী নামক একজন ব্যক্তি দিল্লীর নিজামুদ্দীন মারকাযের উপর তার একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতঃ তাবলীগ জামাতের মধ্যে ব্যাপক ফেৎনা ও বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন। তিনি তার বয়ানে কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা করে এবং ইসলামের মিমাংসিত বিষয়ে মনগড়া ফতোয়া দিয়ে ইসলামের সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। আর দ্বীনের ইলম থেকে বঞ্চিত কতিপয় সাধারণ মানুষ তার কথায় বিভ্রান্ত হয়ে তাবলীগ জামাতের মধ্যে চরম বিশৃংখলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। এহেন পরিস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহর কর্ণধার উলামায়ে কেরাম মৌলভী সাদ সাহেবকে বারবার সতর্ক করে তার ভুলগুলো শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং সাধারণ মুসলমানদেরকে তার অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।

বক্তারা আরো বলেন, মুসলিম উম্মাহর পথ প্রদর্শক উলামায়ে কেরামের সতর্কবানী ও সংশোধনের চেষ্টা সত্ত্বেও মৌলভী সাদ সাহেব তার গোমরাহীর পথ পরিহার করেননি। উপরন্ত বাংলাদেশে তার অনুসারীরা ভ্রান্ত পথ প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম নৈরাজ্য সৃষ্টির পথ বেছে নিয়েছে। উগ্রতা, হানাহানি ও সন্ত্রাসী কায়দায় তারা তাদের মত প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে তারা টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে সন্ত্রাসী হামলা করে হাজার হাজার তাবলীগী সাথী ও আলেমদের খুন জখম করেছে। আর সদ্য ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ গভীর রাতে অতর্কিত হামলা করে টঙ্গী মাঠের সাধারণ তাবলীগী সাথীদের ৪ জনকে কুপিয়ে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে এবং শতশত তাবলীগী সাথীকে জখম করে পঙ্গু করে দিয়েছে।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রাসশকের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে সাদপন্থীদের সন্ত্রাসী ও খুনী আখ্যায়িত করে তাদের মৃত্যুদণ্ড ও নিষিদ্ধের দাবী করা হয়। দাবীগুলো নিম্নরূপ:-

এক. তাবলীগ জামাতের নামধারী খুনি সাদপন্থীদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করে বাংলাদেশে তাদেরকে নিষিদ্ধ করার জোর দাবী জানাচ্ছি।

দুই. ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীদের হত্যাজজ্ঞ ও সন্ত্রাসী হামলার অপরাধে আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা।

তিন. দেশে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা এবং জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত রাখার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী সাদপন্থীদের তাবলীগের নামে মসজিদে মসজিদে যাতায়াত, অবস্থান, জোড়-ইজতেমাসহ যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

চার.  হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে সাদপন্থীরা ইজতেমা ময়দান ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের অধিকার হারিয়েছে। সুতরাং সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের জন্য টঙ্গী ইজতেমা ময়দান এবং কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মারকায শুরায়ী নেজামের তাবলীগের জন্য নির্দিষ্ট করে প্রজ্ঞাপন জারি করা।

পাঁচ. সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা দিল্লীর মৌলভী সাদ সাহেব, তার পরিবারের সদস্যগণ এবং তার বিদেশী দোসরদের বাংলাদেশের মাটিতে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।

জেলার প্রবীণ আলেম বাঁশবাড়িয়া মাদ্রাসার মোহতামেম হযরত মাওলানা নুরুল হক সাহেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুফতি হাফিজুর রহমান মুফতি মোরতাজা হাসান মুফতি মুফতি মুহিব্বুল হক মাওলানা ফখরুল আলম মুফতী শুয়াইব ইবরাহীম মাওলানা আবুল কালাম ডাক্তার মাহফুজুর রহমান জনাব মেসবাহ উদ্দিন আহসান হাজী শাফায়াত হোসাইন শেখ মোঃ দাউদ মাওলানা আবুল ফাতাহ মাওলানা হাফিজুল ইসলাম শাহীন মুফতি জাহিদ আল মাহমুদ মুফতি ইসমাইল জনাব মোঃ মুহসিন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরাম ও তাবলীগের সাথীবৃন্দ।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ