আগামী ২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে জাতির সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চায় খেলাফত মজলিস। আজ মঙ্গলবার আমীরে মজলিসের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলা হয়।
২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য খেলাফত মজলিসের সাধারণ পরিষদের দ্বাদশ অধিবেশন উপলক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে দেয়া লিখিত বক্তব্যে দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, খেলাফত মজলিস একটি নিয়মতান্ত্রিক সংগঠন হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গণে সামর্থানুযায়ী ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৮৯ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে দেশ, জাতি ও ইসলামের পক্ষে ময়দানে ভূমিকা পালন করেছে। হত্যা, নির্যাতন, মামলা, হামলা, জেল, জুলুম উপেক্ষা করে ময়দানে ভূমিকা অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সকলের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলাফত মজলিস ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীগণ রাজপথে ভূমিকা রেখেছে। পতিত খুনি হাসিনা সরকারের পতনের পরে আজকের মুক্ত পরিবেশে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে খেলাফত মজলিস দেশ ও জনগণের স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে বদ্ধ পরিকর। রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, এই জনপ্রত্যাশা পূরণে খেলাফত মজলিস ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, খেলাফত মজলিস মনে করে মানুষের প্রকৃত কল্যাণ ও মুক্তির পথ হচ্ছে ‘ইসলাম’। খোলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শের আলোকে যদি আমরা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে সাজাতে পারি তাহলেই দেশ ও জনগণের কল্যাণ ও মুক্তি অর্জন সম্ভব। বিগত ১৬ বছরের দুঃশাসনের বিচার নিশ্চিত, ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকানো এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সুসংহত করে কাক্সিক্ষত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আজকে জাতীয় ঐক্য জরুরি। মানব মুক্তির শ^াশত আদর্শ-খেলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সমাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা ও চলমান রাষ্ট্র সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য সুসংহত করার লক্ষ্যে আগামী ২৮ ডিসেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খেলাফত মজলিসের সাধারণ পরিষদের দ্বাদশ অধিবেশন আনুষ্ঠিত হবে, ইনশাআল্লাহ। ২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে জাতীর সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চাই আমরা।
তিনি আরও বলেন, খেলাফত মজলিসের এ তৃণমূল কাউন্সিল সফলে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষের দিকে। ইতিমধ্যেই জাতীয় নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র প্রতিনিধিবৃন্দকে অধিবেশনের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। সবাই আন্তরিকভাবে খেলাফত মজলিসের দাওয়াত গ্রহণ করেছেন। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, এনডিএম, নেজামে ইসলাম পার্টি-সহ প্রতিনিধিত্বশীল সকল দলের নেতৃবৃন্দ, দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, পেশাজীবীবৃন্দ উপস্থিত হবেন। দেশ-বিদেশের ডেলিগেটদের পদচারণায় মুখরিত হবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। অধিবেশন উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সাবেক আমীর বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক। সভাপতিত্ব করবেন আমীরে মজলিস মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ।
দুপুর ১২টায় ফায়েনাজ টাওয়ারে আমীরে মজলিসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক মো: আবুল হোসাইন, মনসুরুল আলম মনসুর, বিলাল আহমদ চৌধুরী, জামিরুল ইসলাম প্রমুখ।
হাআমা/