জর্ডানে নিষিদ্ধ হলো মুসলিম ব্রাদারহুড 
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:০২ রাত
নিউজ ডেস্ক

জর্ডানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার (২৪ এপ্রিল) দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী গোষ্ঠী মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, তাদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজেন আল-ফারায়া বলেছেন, এই সিদ্ধান্তটি একটি নাশকতার ষড়যন্ত্রের প্রতিক্রিয়া হিসাবে নেওয়া হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে৷ এই ষড়যন্ত্রে দলটির একজন নেতার ছেলে জড়িত ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

ফারায়া জানিয়েছেন, তথাকথিত মুসলিম ব্রাদারহুডের সকল কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার এবং যেকোনো কর্মকাণ্ড আইনের বিধান লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, এই গোষ্ঠীর মতাদর্শের যেকোনো প্রচারকারীকেও আইনের আওতায় আনা হবে৷

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রমাণিত হয়েছে যে এই গোষ্ঠীর সদস্যরা অন্ধকারে (গোপনে) কাজ করে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে এমন কার্যকলাপে লিপ্ত হয়৷

জানানো হয়েছে, বিলুপ্ত মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা নিরাপত্তা ও জাতীয় ঐক্যে হস্তক্ষেপ করেছে এবং নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা ব্যাহত করেছে৷

গোষ্ঠীটির প্রকাশিত যে-কোনো কিছুর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে জর্ডান সরকার৷

এই ঘোষণার পরপরই পুলিশ রাজধানী আম্মানে দলটির সদর দপ্তর ঘিরে ফেলে এবং তল্লাশি চালায়৷
মুসলিম ব্রাদারহুড অনেক আরব দেশে নিষিদ্ধ হলেও জর্ডানে সংগঠনটি কয়েক দশক ধরেই আইনতসঙ্গতভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে৷ তারা সুন্নি ইসলামপন্থী মতাদর্শ এবং শরিয়া আইনের অধীনে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষিত লক্ষ্য নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে জর্ডানের প্রধান শহরগুলোতে তৃণমূল সমর্থন পেয়েছে৷

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্ট নির্বাচনে জর্ডানের ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট - আইএএফ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে৷ হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসন জিতে নিয়েছে আইএএফ৷ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩২ শতাংশ৷

ভোটর ফল প্রকাশের পর আইএএফ নেতা ওয়ায়েল আল-সাক্কা বলেছিলেন, ‘জর্ডানের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে৷'

মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান মুরাদ আদাইলাহ নির্বাচনটিকে 'জনপ্রিয় গণভোট'  আখ্যা দিয়ে দাবি করেছিলেন, এই ফল প্রমাণ যে হামাসের প্রতি আইএএফ-এর সমর্থনকে জর্ডানের মানুষ গ্রহণ করেছে৷
মুসলিম ব্রাদারহুড অবশ্য দাবি করেছে যে, কয়েক দশক আগেই তারা সহিংস পন্থা ত্যাগ করেছে এবং এখন ইসলামপন্থী লক্ষ্য অর্জনে তারা শান্তিপূর্ণ উপায় অবলম্বন করছে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে

এমএইচ/