৫১ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করে নেতানিয়াহু বললেন, ‘যুদ্ধ ছাড়া উপায় নেই’
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:২০ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

নিজেরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে এখন ইসরায়েল বলছে, তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই! নতুন করে যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ার জন্য হামাসকেই দুষছে তারা। গতকাল শনিবার, এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চাইলেও বারবার তা প্রত্যাখ্যান করছে হামাস। ফলে ইসরায়েল ও তাদের সাধারণ জনগণকে এর চরম মূল্য দিতে হচ্ছে।

ইসরায়েলি হামলায় যখন গাজায় প্রতিদিন পাখির মতো মানুষ মরছে, তখন এমন দাবি করলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফের হামলায় কমপক্ষে ৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ভোর থেকে অন্তত ৫৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অনবরত হামলা চলছে।’

গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ৯০ জনের বেশি নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যেখানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৫১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, বর্তমানে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহের কাছে শাবৌর ও তেল আস সুলতান এলাকায় আইডিএফের সেনারা ঘাঁটি গেড়েছে। সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এই দুই ঘাঁটি থেকেই সর্বশেষ হামলাগুলো পরিচালনা করেছে নেতানিয়াহুর বাহিনী।

সম্প্রতি ইসরায়েলের তরফ থেকে জিম্মি মুক্তিবিষয়ক নতুন একটি চুক্তি প্রস্তাব করা হয়। ওই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি স্বার্থ উপেক্ষা করা হয়েছে অভিযোগ করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আর এরপরই গাজায় হামলার মাত্রা আরও বাড়াতে সেনাদের নির্দেশ দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেনাবাহিনীকে হামাসের ওপর আরও জোরালো আঘাত হানার নির্দেশ দিয়েছি। যুদ্ধ শুরু থেকে বিভিন্ন পক্ষ যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ মানে আত্মসমর্পণ করা। আমি যদি তাদের সেই আহ্বানে সাড়া দিতাম তাহলে রাফাহতে ঢোকা, ফিলাডেলফিয়া (করিডর) দখল, হামাস নেতা সিনওয়ার, মোহাম্মদ দেইফ, হানিয়া কিংবা হিজবুল্লাহর নাসরাল্লাহকে নির্মূল করা সম্ভব হতো না। এমনকি আসাদ সরকারের পতনের পরিস্থিতিও তৈরি হতো না। ইরানের শয়তানের বলয়ও কখনো দুর্বল হতো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সপ্তাহেই হামাসকে জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি বের করে দেওয়া। এরপর তারা গাজার শাসনে বহাল থাকবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ‍গাজা পুনর্গঠনের অর্থ সহায়তা দিয়ে নিজেদের আরও শক্তিশালী করবে। আত্মসমর্পণের শর্তে যুদ্ধ শেষ করা হলে ইসরায়েলের শত্রুদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছাবে। তারা ধরে নেবে ইসরায়েলিদের অপহরণ করলেই ইসরায়েল মাথা নোয়াবে।’

এনএইচ/