একজন ব্যতিক্রমী সরকারি কর্মকর্তার সততার গল্প
প্রকাশ:
১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:২৯ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
আবুল কাসেম ছবিতে যাকে দেখছেন তিনি লক্ষাধিক টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন, ভাবা যায়! উনার সততার গল্প শুনলে আপনার মনে হবে আপনি উনাকে নেট দুনিয়ায় শেয়ার দিয়ে আলোচনায় আনবেন। উনার পুরো নাম মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, পেশায় একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সিলেটে কর্মরত অবস্থায় তাঁর সাথে আমার কাজ করার সুযোগ হয়। সেই সুবাদে কাছ থেকে দেখেছি একজন অফিসার কতটা সৎ হতে পারেন। সম্মানিত পাঠকদের কয়েকটি উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন। ১। যেহেতু তিনি প্রশাসন ক্যাডারের অফিসার তাই বাংলাদেশ সরকারের ভিআইপিদের প্রটোকলে তাঁকে যেতে হয়েছে এবং ভিআইপিদের আপ্যায়ন শিষ্টাচারগত কারণে তাঁকেও গ্রহণ করতে হয়েছে। তিনি গ্রহণকৃত খাবার উনার ডায়েরিতে নোট করে রাখতেন। ২। আমরা সরকারি কর্মচারীদের জন্য সরকার নির্ধারিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতাম, তিনি সেসকল প্রশিক্ষণের রিসোর্স পারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। যেদিন তিনি সরকারি অন্য দায়িত্ব পালনে যেতেন সেদিনের রিসোর্স পারসনের কোনো সুবিধা নিতেন না। এমনকি দুপুরের খাবারও সেই দিন গ্রহণ করতেন না। আমি বললাম, রিসোর্স পারসন হিসেবে ফোনকলে সমন্বয় করেছেন তাহলে কেন খাবার খাবেন না। উত্তরে বললেন, এটা আজকের জন্য তিনি পাপ্য না। দামি খাবার অগ্রাহ্য করে তিনি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার খেতেন। ৩। অফিসের প্রিন্টারে কোনো কিছু প্রিন্ট দিলে ডায়েরিতে লিখে রাখতেন। ৪। আমরা স্থানীয় উদ্যোগে নিরাপদ পানির জার শাখায় রেখে পানি পান করতাম। তিনি কোনোদিন এই পানি খাননি। কারণ তিনি সেই পানি রাখার বিষয়টি সঠিক মনে করতেন না। সিলেট থেকে যখন উনার বদলির অর্ডার হলো তিনি ভিআইপিদের সাথে গ্রহণ করা আপ্যায়ন, অফিসের প্রিন্ট করা কাগজসহ অন্যায় রাষ্ট্রীয় সুবিধা বাধ্য হয়ে নিতে হয়েছে সেগুলোর হিসেব করলেন। তিনি মনে করতেন, সেসকল রাষ্ট্রীয় সুবিধা একজন শিক্ষানবিশ সহকারী কমিশনার কখনও প্রাপ্য হতে পারেন না। তাই সেগুলোর তৎকালীন বাজারমূল্য অনুযায়ী লক্ষাধিক টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে গিয়েছেন। এরকম একজন অফিসার এখন আমতলী উপজেলার ইউএনও কর্মরত আছেন। কিছুদিন আগে উনার বদলির আদেশ হয়, সে বদলি আটকাতে আমতলী উপজেলার সকল শ্রেণির মানুষ মানববন্ধন করে। এটা একজন অফিসারের জন্য খুব সম্মানজনক। আমতলীর মানুষ সেই সম্মান দিয়েছে। এরকম কর্মকর্তা সবসময় প্রচার বিমুখ হয়ে থাকেন। আমি মনে করি ভাইরাল আসলে উনারা হওয়া উচিত। উনারা রিয়েল হিরো, আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক। লেখক: ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা আরএইচ/ |