ইসলাম শান্তি-সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৭:৩৭ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

তাসনীম আহসান

ইসলাম আমাদের শেখায় একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল ও মহানুভব হতে। যুগে যুগে মুসলমানদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে অগণিত মানুষ। সহানুভূতি ও নিজের উপর অন্যকে প্রাধান্য দেওয়ার অনন্য একটি ঘটনা ঘটেছিল ঐতিহাসিক ইয়ারমুকের যুদ্ধে।

তখন হিজরি ত্রয়োদশ সাল। হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনালের শেষলগ্নের কথা। সিরিয়ার দ্বারপ্রান্তে ইয়ারমুকের যুদ্ধ শেষ হলো। মুসলিম সৈন্য সংখ্যা চল্লিশ হাজার। তাদের সামনে থেকে আড়াই লাখ সৈন্যের রোমান বাহিনী পালাচ্ছে । রণাঙ্গনে পড়ে আছে রক্ত, লাশ, আর কর্তিত হাত-পা। থেকে থেকে ভেসে আসছে আহতদের আর্তচিৎকার। বীর ইকরিমা রা. এর হাতে শাহাদাতের শপথ নিয়েছিলেন এক দল মুজাহিদ। সবাই ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ে আছে।

 এমন সময় হারিস বিন হিশাম রা. পানি চাইলেন। পানি আনা হলো। তীব্র পিপাসায় কাতরাচ্ছেন। এই পৃ্থিবীর বুকে আর বেশি সময় নেই। পানির পেয়ালা শুকনো ঠোঁটের সামনে ধরা হলো। ঠিক এ সময় দেখলেন ,ইকরিমা রা. কাতর দৃষ্টিতে পানির দিকে তাকিয়ে আছেন। হারিস বললেন, আমার এই ভাইকে আগে পানি দাও। পানি বাহক ইকরিমার কাছে গেলেন। তার সামনে পানির পেয়ালা ধরা হলো।

 এমন সময় দেখলেন, আইয়াশ বিন আবু রবিয়া রা. তাকিয়ে আছেন। ইকরিমা রা. বললেন, ঐ ভাইকে আগে পানি দাও। পানিবাহক আইয়াশের দিকে ছুটলেন। কিন্তু ততক্ষণে তিনিও আর নেই। ছুটে গেলেন হারিস রা. এর কাছে। কিন্তু তিনিও ততক্ষণে পরপারে চলে গেছেন। আল্লাহ সবার প্রতি সন্তুষ্ট হোন।

এমনই ছিলেন তাঁরা। এটাই ইসলামের সুমহান শিক্ষা। ইসলামের এই শিক্ষা তাঁদের প্রেরণা দিয়েছিলো মৃত্যুর মুখেও অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে এবং অন্যকে প্রাধান্য দিতে। যুগে যুগে মুসলিম মনিষীরা এমন বহু ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। এমন শিক্ষার মাধ্যমে ইসলাম চিরকাল আপন মহিমায় ভাস্বর হয়ে থাকবে।

হাআমা/