ক্ষমা লাভের অনন্য রাত লাইলাতুল বরাত
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৪:৩৮ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান

মুসলিম মিল্লাতের জন্য মহিমান্বিত ও ফযিলত পূর্ন পুন্যময় রাত লাইলাতুল বরাত বা শবেবরাত। লাইলাতুল বরাতে মুমিনের জন্য রয়েছে সীমাহীন বরকত, মুক্তি ও কল্যাণ।ফযিলত পূর্ন মহিমান্বিত পবিত্র শবেবরাত মাহে রমজানের পূর্বের মাস অর্থাৎ শা'বান মাসে হওয়াতে এর গুরত্ব ও তাৎপর্য  মুমিন মুসলমানদের নিকট অনেক।

বিশ্বনবী (সাঃ) এরশাদ করেন শা'বান মাস হল আমার মাস, আর রমজান মাস হল আল্লাহ তায়ালার মাস।

শা'বান মাসের ১৪ তম তারিখের দিবাগত রাত হচ্ছে লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত।গোনাহ থেকে মুক্তি লাভের এক অনন্য রাত শবে বরাত।এই পবিত্র রাতে এবাদত করার ফলে মুমিন মুসলমানদের গোনাহ মাফ হয়ে থাকে।এবং আল্লাহর কাছে মুমিনের মর্যাদা বৃদ্ধি হয়ে থাকে।

রাসুল (সাঃ) বলেন শা'বান মাসের রোজা আমার নিকট অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়।তোমাদের নিকট যখন শা'বানের রাত (শবেবরাত) উপস্থিত হবে তখন তোমরা সে রাতে জাগ্রত থাক, নামায পড়, কুরআন পড়,যিকির আযকার তাসবীহ পড়, দোয়া কর। এবং দিনের বেলা রোজা রাখ।

কারন এ রাতে আল্লাহ তায়ালা সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত প্রথম আকাশে এসে ঘোষণা করতে থাকেন আছো কোন পাপী আমার নিকট প্রার্থনা করবে? আমি তার পাপ ক্ষমা করে দিব।রিযিক প্রার্থী কেউ আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। বিপদ থেকে পরিত্রান পেতে চাও কেউ কি আছো? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে দিব।এ ভাবে ই ফজর পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাহদের ডাকতে থাকেন।

হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল(রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেন, শা'বানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ শবেবরাতে আল্লাহ তায়ালা তার মাখলুকদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন অর্থাৎ এ  রাতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মাগফিরাতের দরজা খুলে দেন।

সীমাহীন ফযিলতপূর্ন রাত লাইলাতুল বরাত

শবেবরাত ফার্সি শব্দ। শবে অর্থ রাত, আর বরাত অর্থ  মুক্তি বা ভাগ্য।যাকে আরবিতে লাইলাতুল বরাত বলা হয়।

যার মূল অর্থ হচ্ছে সৌভাগ্যের রজনী বা মুক্তির রজনী ।

চন্দ্র মাসের অষ্টম মাস শা'বান। শা'বানের চাঁদে এমন একটি ফযিলত  ও বরকতময় রাত আছে সে রাতে এবাদত বন্দেগী করলে সীমাহীন সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়।

আর এই রাত টি  ই হল লাইলাতুল বরাত বা শবেবরাত।

রাসুল (সাঃ) বলেছেন, শবেবরাতের পরবর্তী বছর  পৃথিবীতে কে জন্ম গ্রহন করবে, কে মৃত্যু বরণ করবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়।এ রাতে বনী আদমের আমলনামা আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আর এ রাতে ই তাদের রিযিক বন্টন করা হয়।এক কথায় সৃষ্টিকুলের সকল কিছুর ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে থাকে লাইলাতুল বরাতে।

গোনাহ মাফের এক অনন্য সুযোগ হিসেবে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র লাইলাতুল বরাত দান করেছেন মুমিন বান্দাহদের জন্য। বান্দাহ যেন নিজেদের অতীত পাপাচার থেকে মুক্ত হয়ে আজিমুশ্বান পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারকের জন্য নিজেদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারে এ জন্য ই আল্লাহ তায়ালা রমজান শুরু হওয়ার মাত্র অল্প কিছুদিন পূর্বে  পবিত্র লাইলাতুল বরাত  বান্দাহর জন্য উপহার হিসেবে দান করেছে।

তাই আসুন এই বরকতময় রাতে আমরা বেশী করে নামায, কোরআন তেলাওয়াত, দুরুদ শরিফ, তওবা এস্তেগফার,  যিকির আযকার, সাধ্যমত  দানখয়রাত করা সহ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট নিজেদের অতীত পাপাচারের কথা স্বরণ করে কান্নাকাটির মাধ্যমে অতিবাহিত করি এবং সম্ভব হলে পরদিন রোজা রাখি।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে অত্যন্ত আদবের সাথে পবিত্র লাইলাতুল বরাতে এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে অতিবাহিত করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আরএইচ/