রমজানে ছোলা-খেজুরে উত্তাপ বাড়ার শঙ্কা!
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০:৫৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

রমজানকে সামনে রেখে খেজুর, ছোলার বাজারে বাড়তে পারে উত্তাপ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চাহিদার তুলনায় গেল ছয় মাসে পণ্য দুটির আমদানি অনেক কম। তবে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, আগের মজুত থাকায় বাজার অতটা অস্থির হবে না। এদিকে, পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এর মাঝে মার্চে শুরু হতে যাওয়া রমজানে, পণ্যের দাম কেমন হতে পারে এ নিয়ে শঙ্কিত তারা। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা জানান, যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। রোজায় এ অবস্থা কি হয় কে জানে!

 বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, রমজানকে সামনে রেখে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকা খেজুরের আমদানি অনেক কম। রমজানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টনের বিপরীতে গত জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানি হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ২৩৩ টন।

সরকার এই পণ্যে ভ্যাট ট্যাক্স কমালেও বাজারে দাম না কমার কথা আগে ভাগেই বলছেন ব্যবসায়ীরা। নওশীন ফ্রুটস ইন্টারন্যাশনালের প্রোপ্রাইটার মো. রায়হান তালুকদার বলেন, ২৫ শতাংশ শুল্ক কমানো হলেও এর প্রভাব জনগণের ওপর পড়বে না। শুল্ক আরও কমানো উচিত।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম ও শুল্ক কমানোর প্রভাব কিছুটা হলেও পড়বে খেজুরের বাজারে।

অবশ্য ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের জেরে আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আমদানি বাড়ার পাশাপাশি আগের থাকা পণ্যের মজুত চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে।

কোল্ড স্টোরেজ সমিতির পরিচালক গোলাম সরওয়ার বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেক ব্যবসায়ীই খেজুর আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। চাহিদা বাড়ায় আগামী দিনগুলোতে বাড়তে পারে আমদানিও।

এদিকে, ইফতারির আরেক অনুষঙ্গ ছোলার আমদানি হয়েছে ৩৯ হাজার ৬২৩ টন। রমজানে চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। আর, চিনি আমদানির পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ ৬২ হাজার টন এবং ভোজ্যতেল ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন।

পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছে, প্রতিবছর রমজানের আগে সরকার তাদের নিয়ে বসলেও এবার সেই উদ্যোগ এখনো নেই। মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী সৈয়দ বসির উদ্দিন বলেন, এলসির মাধ্যমে পণ্য কিনে দেশে আনার পর অনেক ব্যবসায়ীই বলেন খরচ বেশি পড়েছে। এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে।

আর অর্থনীতিবিদেরা কৃত্রিম মজুত ঠেকানোর উদ্যোগ নিতে জোর তাগিদ দিচ্ছেন। অর্থনীতিবিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আমদানি করা পণ্য বেশিরভাগ সময়ই ব্যবসায়ীরা মজুত করে রাখে। এতে তৈরি হয় পণ্যের সংকট। এ সব মজুতাগার নজরদারির আওতায় আনতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য না কমায় বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে তাদের মত।

আরএইচ/