থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজির শব্দে বিপর্যস্ত জনজীবন
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৫৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

|| মুহাম্মাদ যায়েদ খান ||

নতুন বছরের আগমন উদযাপন করতে গিয়ে আমরা কি ভুলে যাচ্ছি, এই পৃথিবী শুধু আমাদের একার নয়? থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের নামে বিকট শব্দে আতশবাজি আর বেপরোয়া উচ্ছ্বাস যেন সাধারণ মানুষের জীবনে বয়ে আনে ভোগান্তির কালো মেঘ। উৎসবের এই ঝলমলে আলো যেখানে একদিকে আনন্দের প্রতীক, অন্যদিকে তা অনেকের জীবনে অশান্তি ও কষ্টের কারণ। 

একটি রাত, অসংখ্য বিপর্যয়

শিশুদের কান্না, হাসপাতালের রোগীদের কষ্ট, বয়স্কদের উদ্বেগ, আর পোষা প্রাণীদের ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থা—এই চিত্রটি থার্টি ফার্স্ট নাইটের উল্টোপিঠ। 

আতশবাজির উচ্চ শব্দে হাসপাতালের রোগীরা বিশ্রামহীন অবস্থায় কাটিয়েছেন। একজন চিকিৎসক বলেন, "রোগীর সেবা দেওয়ার সময় দেখেছি, অনেক রোগীর হৃদযন্ত্রের কার্যক্রমের ওপর শব্দের প্রভাব পড়েছে। এটি খুবই বিপজ্জনক।" 

বাজি এবং বক্সের বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশু। একজন অভিভাবক জানান, "আমার সন্তান আতশবাজির শব্দে এত ভয় পেয়েছিল যে শান্ত করতে অনেক সময় লেগেছে। এটি তার জন্য মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।" 

এই সব বিকট শব্দে পোষা প্রাণী সহ গাছগাছালিতে থাকা পাখি তাদের স্বাভাবিক আচরণ হারিয়ে ফেলে।হাজার হাজর পাখির মৃত্যুর কারণ এই শব্দ দূষণ। কেউ কেউ খাবার বন্ধ করে দেয়,  আবার অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এই উদযাপনে শুধু মানুষের ভোগান্তিই নয়, পরিবেশের ওপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। আতশবাজির মাধ্যমে বায়ু ও শব্দদূষণ মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। এক বিশেষজ্ঞের ভাষায়, "এই রাতের মাত্র কয়েক ঘণ্টার আতশবাজি পুরো শহরের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। শব্দদূষণের মান অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যায়, যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।" 

আনন্দ হোক সবার জন্য—একটি নতুন ভাবনা

থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন তো হারাম। নতুন বছর উপলক্ষে আমরা যা করি তা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। নতুন বছরে নিয়ত করতে হবে পূর্বে রবের যতো অবাধ্যতা করেছি, পাপ করেছি সবকিছু থেকে তওবা করে নতুন বছরটা নতুন রূপে শুরু করতে হবে।

আমাদের আনন্দ যেন অন্য কারও জীবনে দুঃখের কারণ না হয়। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, উৎসব উদযাপন এমনভাবে করা যা সবার জন্য সুখকর হয়। নতুন বছরের শুরুতে আমাদের শপথ হওয়া উচিত—নিজেদের আনন্দকে সবার আনন্দের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া এবং কোনোভাবেই তা অন্যের কষ্টের কারণ না করা। 

আসুন, আমরা পরিবর্তন শুরু করি নিজ থেকে। উৎসব হোক সবার জন্য, এবং পৃথিবী হোক আরও শান্তিময়।

কেএল/