জুমার দিন যে সময় দোয়া কবুল হয়
প্রকাশ:
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৪১ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
|| মুশফিক হাবিব || মানুষের প্রয়োজন ও চাহিদা সহস্র। প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ সব করে। চাহিদা পূরণে কেউ সাধ্যের কমতি করে না। ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশ্বাস করে, আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন ও চাহিদার কথা তুলে ধরলে আল্লাহ প্রয়োজন পূরণ করেন। চাহিদায় ঘাটতি থাকলে তা দূর করে দেন। এ জন্য সবাই চায়, আল্লাহর কাছে তার কথা গৃহীত হোক। তার দোয়া কবুল হোক। শুক্রবার বা জুমার দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ দিন। এ দিনের কিছু সময়ে আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না বলে হাদিসে রয়েছে। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন সময়ের কথা উল্লেখ হয়েছে। তবে জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময় কোনটি সে সম্পর্কে মতানৈক্য থাকলেও দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই। আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুল সা. আমাদের সঙ্গে একদিন শুক্রবারের ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়টায় যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুল সা. তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি) আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুল সা.-কে বলতে শুনেছি, তিনি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে বলেছেন, ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিই সেই বিশেষ মুহূর্ত। (মুসলিম ও মিশকাত) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সা. বলেন, ‘ইমাম মিম্বরে বসা থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টাতে দোয়া কবুল হয়।’ (মুসলিম, ইবনু খুজাইমা, বয়হাকি) জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল সা. বলেন, ‘জুমার দিনে ১২ ঘণ্টা রয়েছে। তাতে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আসরের শেষ সময়ে তা সন্ধান করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস : ১৩৮৯) আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. বর্ণনা করেন, শুক্রবারে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। প্রখ্যাত মুসলিম মনীষী আল্লামা ইবনু কায়্যিমিল জাওজিয়া রহ. বলেন, জুমার দিন আসরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। (যাদুল মাআদ : ২/৩৯৪) ইমাম আহমদ রহ.-ও একই কথা বলেছেন। (তিরমিজির ২য় খণ্ডের ৩৬০ নং পৃষ্ঠায় কথাটি উল্লেখ আছে) মোটকথা, জুমার দিনে বিশেষ একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে সময় আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। এ সময় সম্পর্কে আরও কিছু অভিমত হলো জুমার নামাজে সুরা ফাতিহার পর আমিন বলার সময়। আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে। মুয়াজ্জিন আজান দেওয়ার সময়। জুমার দিন সূর্য ঢলে পড়ার সময়। ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে দাঁড়ানোর সময়। উভয় খুতবার মধ্যবর্তী সময়। জুমার দিন ফজরের আজানের সময়। প্রত্যেক জুমায় আলাদা আলাদা সময়ে। গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযাগ্য কথা হলো, দোয়া কবুলের সময়টি পুরোদিনের ভেতর লুকিয়ে আছে। পুরোপুরি নির্ধারিত না করার উদ্দেশ্য হলো বান্দা যেন জুমার দিন সর্বদা ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ায় মগ্ন থাকে। এনএ/ |