‘টঙ্গীর ঘটনা ছিল পরিকল্পিত হামলা, দু-পক্ষের সংঘর্ষ নয়’
প্রকাশ:
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:৩৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
|| হাসান আল মাহমুদ || ‘টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ১লা ডিসেম্বর ২০১৮ সালে সাদপন্থীরা তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থানরত আমাদের শুরায়ি নেজামের সাথীদের উপর একতরফা হামলা চালায়।তারা গায়ে পড়ে আমাদের উপর আক্রমণ করে বসে। আমরা ছিলাম নিরীহ, ইবাদতরত। এটি ছিল পরিকল্পিত হামলা; কোনো ভাবেই দু-পক্ষের সংঘর্ষ ছিল না।’ আজ রবিবার (১ লা ডিসেম্বর) ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সাংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ২০১৮ সালের ১লা ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের কর্তৃক পুলিশের ছত্রছায়ায় নিরীহ নিরস্ত্র তবলিগী সাথী ভাই (বয়োবৃদ্ধ সাথীসহ), ওলামা মাশায়েখ এবং ছাত্রদের উপর নৃশংস হামলার বিচারের দাবিও করা হয়। সাংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন আল মানহাল মাদরাসার পরিচালক বিশিষ্ট আলেম মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী। লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শুনান বিশিষ্ট দাঈ ও আলেমেদ্বীন মুফতি আমানুল হক। বক্তব্য দেন আল্লামা আব্দুল হামিদ মধুপুরী পীর সাহেব। লিখিত বক্তব্যে মুফতি আমানুল হক বলেন, দিল্লির মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারী তথা সাদপন্থী নেতা ওয়াসিকুল ইসলামের কথায় ময়দানে প্রস্তুতিতে কর্মরত নিরীহ নিরস্ত্র সাধারণ মুসল্লি তাবলিগের সাথি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর ধাঁরালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের সাথীরা সেদিন পূর্ণভাবে আমল করে আসছিলেন। সাথীদের হাতেও সেদিন তাসবিহ ছিল। মেহনতের মধ্যে পাহারার সাথীদের হাতে একটি বাঁশ থাকে। এটা নিদর্শন। কিন্তু আমাদের সাথীদের হাতে সেদিন তাসবিহ ছিল। ময়দানের পূর্ব পাশে সাদপন্থীদের নৃশংস আক্রমণে আমাদের অন্তত ৫ হাজার নিরস্ত্র সাধারণ মুসল্লি তাবলিগের সাথি ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষক মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তারা লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তাদের থেকে টঙ্গী ময়দানের পশ্চিম উত্তর কোণে অবস্থিত কোমলমতি ছাত্র-শিক্ষকদের কেউই রেহাই পায়নি। আমরা বলতে পারি, এই ঘটনায় আওয়ামী সরকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আমরা চাই এই সরকার এই হামলার যথাযথ তদন্ত করে দ্রুত ন্যায়বিচার করবে। তিনি বলেন, আজকের বৈষম্যবিরোধী প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি হলো, সারাদেশ থেকে কীভাবে হাজার হাজার সাদপন্থী সন্ত্রাসী ঢাকায় জড়ো হলো? এবং কীভাবে টঙ্গীতে একত্র হলো? তা আপনারা তদন্ত করে খতিয়ে দেখুন, প্রকৃত সত্য জাতির সামনে পেশ করুন এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করুন। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই জনগণের এই সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে অতি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ১ ডিসেম্বর, ২০১৮ এর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের নৃশংস হামলা ও হতাহতের ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করবেন। অপরাধীদের শনাক্ত করবেন এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবেন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট দাঈ ও আলেমেদ্বীন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ ও মাওলানা নাজমুল হাসান। এছাড়া সাংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা লোকমান মাজাহারী, মুফতি মাসুদুল করিম, মুফতি বশিরউল্লাহ প্রমূখ দেশের শীর্ষ আলেমগণ। বক্তাগণ উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১লা ডিসেম্বর ভারতের বিতর্কিত মাওলানা সাদ অনুসারীরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থানরত শুরায়ী নেজাম তথা ওলামা হাযরাতদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত তবলিগী সাথী ভাই (বয়োবৃদ্ধ সাথীসহ), সাধারন মুসল্লি, ওলামা-মাশায়েখ এবং ছাত্রদের উপর নৃশংস হামলা চালায়। এতে তৎকালীন গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার বেলাল সাহেব প্রতক্ষ্যভাবে জড়িত ছিলেন। বক্তারা আরও বলেন, সাদপন্থীরা নামাজে সেজদারত অবস্থায় লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আমাদের সাথীদের (বয়োবৃদ্ধ সাথীসহ) আহত করে, মসজিদ-মাদরাসা ভাংচুর করে। বিশ্ব ইজতেমার জন্য টঙ্গী ময়দান প্রস্তুত করতে আসা বিভিন্ন মাদরাসার ছোট ছোট কোমলমতি ছাত্রদের ধরে ধরে নদীর পানিতে ছুড়ে মারে। সম্মেলনে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী প্রশাসনসহ সাদপন্থীদের বিচারের দাবি জানানো হয়। হাআমা/ |