কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে রোপা আমন ধান কাটা শুরু
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:১০ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

এন.এ সাগর
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার জেলায় শুরু হয়েছে রোপা আমনের আগাম জাতের ধান কাটার উৎসব। আগাম জাতের ধানের সোনালী শীষে ভরে গেছে কৃষকের ক্ষেত। বাতাসে ঢেউ তুলছে সোনালি ধানের শীষ। ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ধান কাটা-মাড়াই কাজে কৃষকের পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়েছে দিনমজুরদেরও। সোনালী ধান হাসি ফুটিয়েছে তাদের মুখে। জেলায় কক্সবাজার সদর, রামু, মহেশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া উখিয়াসহ সব উপজেলার বিভিন্ন জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান। সোনালি ধানের ঘ্রাণে ভরে আছে মাঠ। সব জায়গায় চলছে ধান কাটার উৎসব।

কৃষিবিদরা জানান, গেলো বন্যায় রোপা আমন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ঘাটতি থাকতে পারেন। তবে ফলন ভালো হওয়ার কারনে ফলন বাড়তে পারে বলেও তাঁদের ধারণা। তারা বলছেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে। এর ফলে একই জমিতে তিনটি ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবে কৃষকরা।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমন ধানের সোনালি রং-এ সেজেছে কৃষকের ফসলি মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু পাকা ধানের সোনালী রুপ। চারিদিকে সোনালী ফসলের সমারোহ। সোনালী শীষে হাতে ধরা দিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। কৃষকের পাশাপাশি শ্রমজীবীরা ধান কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, জেলায় চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৭৮ হাজার ৭৩০ হেক্টর। গত বছর ৭৮ হাজার ৯৩০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও উৎপাদন হয়েছিল ৭৮ হাজার ৮৪৫ হেক্টর। এরমধ্যে হাইব্রিড ১২ উফশী ৩৪ এবং দেশীয় তিন জাতেরসহ ৪০-৪২ জাতের আবাদ হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কম সময়ে ফলন এবং কম খরচে এই নতুন জাতের ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কক্সবাজারের অনেক কৃষক।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. বিমল কুমার প্রামাণিক বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ কিছুটা কম হয়েছে। বন্যার কারণে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আশানুরূপ ফলন আশা করছি।

কৃষকরা বলেন, এ বছর ফলন তুলনামূলক ফসল ভালো হয়েছে। মনপ্রতি ১৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হওয়ার আশা। তবে এ বছর বন্যায় নিচু এলাকার আমন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উঁচু এলাকায় ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। আগাম জাতের ধান কেটে এই জমিতেই বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা, আলুসহ শীতকালীন সবজি আবাদ করতে পারবেন তারা। তাই প্রতিবছরই জেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে আগাম জাতের রোপা আমন ধানের চাষ।

খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কৃষক মাহমুদুল হক বলেন, ২ বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান লাগিয়েছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনি ধান কাটা শুরু করবেন তিনি।

কৃষক আমিন হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারনে জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে ধানের চেয়ে চিটা বেশি হয়েছে। ধানের দাম ভালো থাকায় ক্ষতিটা পুষিয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ বছর ধানে রোগ ও পোকার আক্রমণ একবারেই ছিল না। পাশাপাশি কৃষক পর্যায়ে সারের সরবরাহ ভালো থাকায় কৃষকরা সুষম পরিমাণে জমিতে সার ব্যবহার করতে পেরেছেন। যে কারণে ফলন ভালো হয়েছে। যদি-ও বন্যার কারনে আবাদ কম হলেও ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার খুব কাছাকাছি পৌঁছানো যাবে।

এনএ/