নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:৫৪ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী এক বা দেড় বছরের মধ্যে আয়োজন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেছেন, তাদের সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা দেয়া উচিত। সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে, তাই পরিষ্কার করা জরুরি।

আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে ভোলা সরকারী স্কুল মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তরের উদ্যোগে ভোলার আবাসন গ্যাস সংযোগ ইন্ট্রাকোর সাথে অবৈধ চুক্তি বাতিল, ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (চজ) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইহকাকালীন শান্তি ও পারকালে মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে- আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা উপাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওবায়েদুর রহমান বিন মোস্তফা। সংগঠনের ভোলা জেলা উত্তর সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা তারকেুল ইসলাম তারেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ভোলা শহর একটি দ্বীপ শহর। এখানের মানুষের গ্যাসের চাহিদা দীর্ঘ দিনের। এখানের গ্যাস পাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি হকদার এ শহরের বাসিন্দাদের। এটা না করে ইন্ট্রাকোর সাথে কৃত চুক্তি বাস্তবায়ন হতে পারে না। এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। তিনি বলেন, ভোলার প্রতিটি বাড়ীতে গ্যাস লাইন পাওয়ার পর ভিন্ন চিন্তা। তিনি ভোলা-বরিশাল সেতু অবিলম্বে বাস্তবায়ন করে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করাই সর্বপ্রধান কাজ হওয়া উচিত।

ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাই হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ। নতুন নির্বাচন কমিশন সততা, নিষ্ঠা ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করবে বলে আমরা আশাবাদী। বিগত ১৬ বছর নির্বাচন কমিশন দলীয় অনুগত কমিশনে পরিণত হয়েছিলো। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার পরিবর্তে নির্বাচন নিয়ে তামাশা করেছিল। অতিতের অবস্থা ফিরে আসুক জনগণ তা চায় না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে না পারলে জনগণ রুখে দাড়াবে। নারী উন্নয়নের নামে এনজিও নারীদের দিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, এ কমিটি নারীদের উন্নয়নের পরিবর্তে ধ্বংস করবে। কাজেই হুশিয়ার হয়ে যান।

তিনি বলেন, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চরম বিতর্কিত উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে জনগণ মেনে নেয়নি। ফারুকীকে দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদ থেকে প্রত্যাহার করা হোক, তা দেশবাসী প্রত্যাশা করে।

সংস্কার কার্যক্রম গতিশীল ও গণসম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো রাষ্ট্র সংস্কার করা; যাতে করে আর কখনো কোনো স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে। সেজন্য সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। এখন এই কমিশনগুলোকে গতিশীল করুন। রাজনৈতিক দল, উলামা শ্রেণি এবং বিভিন্ন পেশা ও স্তরের জনমানুষকে সম্পৃক্ত করুন। ইতোমধ্যেই মানুষের মধ্যে কানাঘুষা তৈরি হয়েছে। এই কানাঘুষা সংস্কারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ তাদের খাদ্যের নিশ্চয়তা চায়, জীবনের নিরাপত্তা চায়। স্বৈরাচারের পতনের পরে মানুষ ভালো কিছু আশা করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোন কোন ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে। এটা মানুষকে হতাশ করেছে। সেজন্য বলবো, যে কোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন। শক্তহাতে সিন্ডিকেট ভেঙে দিন। মনে রাখবেন এই দ্রব্যমূল্যই আপনাদের প্রতি জনসমর্থন কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

হাআমা/