গাজীপুরে গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
প্রকাশ:
২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:১৫ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
গাজীপুর (উত্তর) প্রতিনিধি গাজীপুরের শ্রীপুরে স্মৃতি রানী সরকার (৩৬) নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি ধারালো দা ও এক জোড়া জুতাও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করেছে পুলিশ। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল এ সব নিশ্চিত করেন। বাড়ির পেছনের টিনের বেড়াটি ভাঙা থাকায় স্থানীয়দের ধারণা দুর্বৃত্তরা বসতবাড়ির পেছন দিয়ে প্রবেশ করে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানোর পর গলাকেটে হত্যা করে স্মৃতি রানী সরকারকে। সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়ন বরমী বাজারের কামারপট্টির নিমাই চন্দ্র সন্ন্যাসীর বসতবাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত স্মৃতি রাণী সরকার ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার দৌলতপুর গ্রামের সুনীল পালের মেয়ে। তার স্বামী কাব্য সরকার শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের কেশব চন্দ্র সরকারের ছেলে। বাবার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধের কারণে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বামী কাব্য সরকার বরমী বাজারের কামারপট্টির মামার বাড়িতে বসবাস করেন। নিহতের নানি শাশুড়ি রূপকোনা বলেন, প্রতিদিন ভোরে আমি বাজারের মন্দিরে পূজা দিই। এ জন্য একটু আগেই আমাকে ঘুমাতে হয়। আমি পাশের ঘরে ঘুমের প্রস্তুতি সেরে বিছানায় শুয়েছিলাম। স্মৃতি তার দেড় বছর বয়সী ছেলে শ্রেয়ানকে নিয়ে তার ঘরে ছিল। হঠাৎ স্মৃতি দিদা বলে চিৎকার দেয়। দ্রুত আমি ঘরের বাইরের বারান্দায় এসে দেখি স্মৃতি বসে আছে। হঠাৎ দেখি সে বারান্দায় লুটিয়ে পড়ে। লাইটের সুইচ অন করে দেখি পুরো শরীর রক্তাক্ত। এরপর আমি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে কাউকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেননি বলে জানান তিনি। নিহতের ছোট ভাই হৃদয় সরকার বলেন, হত্যার এক ঘণ্টা আগে আপা আমাকে ফোন করে জানায়- তার স্বামী ইন্ডিয়া যাওয়া জন্য রওনা হয়েছে। এক ঘণ্টা পর আপুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন করে জানায় বাড়িতে প্রবেশ করে কারা যেন আপুকে কুপিয়েছে। এরপর আমরা দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মরদেহ দেখতে পাই। আপুকে ওরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার পর গলাকেটে হত্যা করে। বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হাদিউল ইসলাম বলেন, রাতে বসতবাড়িতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। এরপর তারা দ্রুত দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্বজনরা প্রথমে তাকে স্থানীয় ক্লিনিক ও পরবর্তীতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুদেপ চক্রবর্তী বলেন, স্মৃতি রানীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে কয়েকজন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলাকেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, রাতেই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞেসবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। |