ছাত্রলীগ মুক্ত ক্যাম্পাসে চবিয়ানদের খিচুড়ি পার্টি
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর, ২০২৪, ০৫:১০ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

সৈয়ব আহমেদ সিয়াম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

অক্টোবরের বৃষ্টি ভেজা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। খবর এলো নিষিদ্ধ হয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সব হলগুলো দখল করে রেখেছিলো। ওরা হল ছেড়ে পালানোর পর মেধার ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে হলের সিট বরাদ্দ। বলছিলাম বৃষ্টি ভেজা বৃহস্পতিবারের কথা।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচ (২০২০-২১ সেশন)। আমাদের অ্যাটাচমেন্ট শহিদ সোহরাওয়ার্দী হলে। রাতে এশার পর হুট করে গ্রুপে নক করলো ব্যাচের সিআর সোহান। আলোচনা চলছিলো, ছাত্রলীগ মুক্ত বৃষ্টি ভেজা সোহরাওয়ার্দী হলে খিচুড়ি পার্টি হলে কেমন হয়? যেই বলা সেই কাজ। এক ডাকে সোহরাওয়ার্দী হলের ডাইনিংয়ে হাজির ১৯ জন। কবি সুজন খুব ভালো রান্না করতে পারে। শুরু হলো মুরগি দিয়ে খিচুড়ি রান্না।

খিচুড়ি রেডি হচ্ছে। আর এদিকে টেবিলে সামসুল কাউনাইন বন্ধু গান ধরলো “দে দে পাল তুলে দে, মাঝি হেলা করিস না। দে দে পাল তুলে দে, মাঝি হেলা করিস না। ছেড়ে দে নৌকা, আমি যাব মদিনা...”। সাথে কোরাস কন্ঠে গেয়ে উঠলো তৌফিক, রাহী, আতিউর, আতাউর, তারেক, নজরুল, মোরশেদসহ সব বন্ধুরা।

সামসুল কাউনাইন আর তারেক মনোয়ার ওরা আজাদী মঞ্চের দুই জনপ্রিয় শিল্পী। আতাউর আর আতিউর ডিপার্টমেন্টের দুই টপার। তৌফিক আর রাহী দুই তুখোড় লেখক। আগে হলে ঘুরে বেড়ালে ছাত্রলীগের সব চোর-বাটপার চোখে পড়তো। আর এখন হল জুড়ে সব মেধাবী মুখ দেখে মন জুড়িয়ে যায়।

গানে গানে উৎফুল্ল প্রাণে রাত সাড়ে এগারোটায় শেষ হলো আমাদের খিচুড়ি পার্টি। হল থেকে বেরিয়ে জিরো পয়েন্টে সোডিয়াম লাইটের নিচে জড়ো হলাম বন্ধুরা। ওয়ালিউল্লাহ কি একটা স্কলারশিপ পেয়েছে। সেই খুশিতে সবাইকে মোজো খাওয়ালো। মোজো খেতে খেতে দেখি অ্যারাবিক ডিপার্টমেন্টের পুরো একটা ফ্রেন্ডস টিম ক্রিকেট ব্যাট-বল নিয়ে হাজির জিরো পয়েন্টে। তো হয়ে যাক একটা ক্রিকেট ম্যাচ? না হওয়ার কী আছে? শুরু হয়ে গেলো খেলা। এখন রাত সাড়ে বারোটা। ইসলামিক হিস্ট্রির নজরুল ব্যাটিং করছে আর বলিং করছে অ্যারাবিকের রুমী। ওদিকে প্রক্টরিয়াল বডি গাড়ি নিয়ে মাঝরাতে টহল দিচ্ছে ক্যাম্পাস। আর এদিকে ছাত্রলীগ মুক্ত বৃষ্টি ভেজা  নিরাপদ ক্যাম্পাসে জিরো পয়েন্টের সোডিয়াম লাইটের  নিচে বসে আমি লেখছি সব বৃত্তান্ত। আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া আমার রব আল্লাহর কাছে। একদিকে মেধাবীদের হাতে সোহরাওয়ার্দী হল আর অন্যদিকে দায়িত্বশীল স্যারদের কাছে প্রক্টরিয়াল কন্ট্রোল। চবির কাঁটাপাহাড়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে আজ "হ্যাঁ, এমন স্বাধীনতাই তো চেয়েছি আমি।"

এনএ/