‘রাষ্ট্রপতি গোপনীয়তার শপথ ভঙ্গ করে দায়িত্বে থাকার অধিকার হারিয়েছেন’
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:৫৮ রাত
নিউজ ডেস্ক

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই বলে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ চুপ্পু সাহেব পুরো দেশবাসির সাথে প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করেছেন এবং সেই সাথে তিনি তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে প্রকাশ্য মিথ্যাচার ও শপথ ভঙ্গ করে তিনি আর তার পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন। অবিলম্বে আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি। ফয়জুল করীম অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উদ্যেশে বলেন, আপনাদের সাথে পুরো দেশের ১৮ কোটি মানুষের জনসমর্থন রয়েছে। আপনারা দুর্বল নন। আপনারা আরও কঠোর হোন। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে রাখুন। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করুন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিন।

আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা শাখা আয়োজিত বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংগঠনের ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা নূরুল ইসলাম আলআমিন, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, বরিশাল জেলা উপদেষ্টা আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ, মাওলানা কাওছারুল ইসলাম, যুবনেতা মাওলানা ইব্রাহিম মৃধা, চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির। সংগঠনের বাকেরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা নাসির উদ্দিন রোকন ডাকুয়ার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা মাহমুদুল হাসান জাহাঙ্গীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে থানা, ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, কালো টাকা, পেশীশক্তি ও সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থার বিকল্প নেই। পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ভোটারদের ভোটের প্রকৃত মুল্যায়ন হয়। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ফ্যাসিস্ট হতে পারে না এবং এককভাবে কোন দল সরকার গঠন করতে পারে না। ফলে ফ্যাসিস্ট হওয়ারও ভয় থাকে না। এককভাবে ভোটে নির্বাচিত সরকার জালিমের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়। বাংলাদেশের বিগত ৫৩ বছরের ইতিহাসের আলোকে বলা যায় এদেশে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় সরকারের।

মুফতী ফয়জুল করীম আরও বলেন, বিগত ১৬ বছর এদেশের মানুষ জুলুম, নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হয়ে ছিলো। মানুষ ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে মানুষ স্বাধীনভাবে সবকিছু করতে পারছে। তিনি গণহত্যাকারী সরকারের বিচার দাবী করেন।

মুফতী ফয়জুল করীম পল্লী বিদ্যুত নিয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে সরকারকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাথে পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী উপদেষ্টাকে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

নায়েবে আমীর বলেন, রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসে গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী চক্রান্তের সুযোগ দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রপতির চেয়ারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ জাতীয় শত্রু চিহ্নিত করেছে। এ দেশের চিহ্নিত জাতীয় শত্রু ভারত ও তার তাঁবেদার আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ১৪ দল, রাষ্ট্রপতির সব মন্তব্য ও প্রচেষ্টা পতিত ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের রক্ষা ও পুনর্বাসন করা। দেশের মানুষ যখন শহীদদের লাশ এখনো কবর দিচ্ছে, এর মধ্যেই গণদুশমন আওয়ামী লীগ নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা এই সাহস পাচ্ছে খুনি হাসিনার দোসর এই অবৈধ রাষ্ট্রপতির জন্য। অবিলম্বে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে।

হাআমা/