দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমাতে যেসব আমল শিখিয়েছেন নবীজি সা.
প্রকাশ:
১২ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:৫৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
দুশ্চিন্তা বলতে অনিশ্চয়তা কিংবা আতঙ্ক থেকে সৃষ্ট অতিরিক্ত ভয়কে বোঝায়, যা মানুষের মন ও মস্তিষ্কের মধ্যে এক ধরনের উচ্চচাপ সৃষ্টি করে। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে কখনো কখনো আমাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়মিত দুশ্চিন্তার সঙ্গে যোগ হয় তীব্র মাথাব্যথা, পেশি বেদনা ও আতঙ্ক ব্যাধিসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা। সারাবিশ্বেই ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা এক ভয়াবহ ব্যাধি বলে স্বীকৃত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন লোক বিষণ্নতা ব্যাধিতে ভুগছে, যা তাদের অক্ষমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বাংলাদেশেও দিন দিন বিষণ্নতায় ভোগা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রথম হলো ইমান ও তাকওয়াকে মজবুত করতে হবে। যার ইমান যত দুর্বল সে তত তাড়াতাড়ি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আর যার ইমান শক্তিশালী দুশ্চিন্তা তাকে কম স্পর্শ করে। যত সমস্যাই হোক আল্লাহ তায়ালা আমার সমস্যা দেখবেন— এ বিশ্বাস রাখতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আছেন, তার ওপর আমার ভরসা থাকবে। আমার এ সমস্যার একটা সমাধান হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। আর কিছু না হোক আখেরাত আমার সামনে আছে। এ জন্য ইমানদার ডিপ্রেশড হয়ে ভেঙে পড়বে এটা তার জন্য সাজে না। এ জন্য ইমান মজবুত করলে আমরা পেরেশানি থেকে মুক্তি পাব। এ ছাড়া পেরেশানি থেকে মুক্তির জন্য দরুদ, ইসতেগফার এবং দোয়ায়ে ইউনুস— এ তিনটি আমল পরীক্ষিত। যে কোনো ডিপ্রিশন থেকে বাঁচার জন্য এগুলো মহৌষধ। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকার সর্বোত্তম উপায় হলো— আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাওয়া। আবু সাঈদ আল-খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসুল সা. মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে আবু উমামাহ নামক এক আনসারি সাহাবিকে দেখতে পেয়ে তাকে বলেন, হে আবু উমামাহ, কী ব্যাপার! আমি তোমাকে নামাজের ওয়াক্ত ছাড়া মসজিদে বসে থাকতে দেখছি? তিনি বলেন, সীমাহীন দুশ্চিন্তা ও ঋণের বোঝার কারণে হে আল্লাহর রাসুল। তিনি বলেন, আমি কি তোমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দেব না, তুমি তা বললে আল্লাহ তোমার দুশ্চিন্তা দূর করবেন এবং তোমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও করে দেবেন? তিনি বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি সা. বলেন, তুমি সকাল-সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়া বলবে।’ আবু উমামাহ রা. বলেন, আমি তা-ই করলাম। ফলে মহান আল্লাহ আমার দুশ্চিন্তা দূর করলেন এবং আমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও করে দিলেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৫৫) দোয়াটি হলো- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجزِ وَالكَسَلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الجُبنِ وَالبُخلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ غَلَبَةِ الدَّينِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুজনি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিদ দাইনি ওয়া কহরির রিজাল। অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা থেকে আশ্রয় চাই। আমি আশ্রয় চাই অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, আপনার কাছে আশ্রয় চাই ভীরুতা ও কার্পণ্য থেকে, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের রোষানল থেকে। সর্বশেষ আমল হলো— ভোররাতে তাহাজ্জুদের সময় চোখের পানি আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা অসাধ্যকে সাধন করে দেবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন। এনএ/ |