হালুয়াঘাটে বন্যার ৮ম দিনেও পানিবন্দী ৪০ হাজর মানুষ
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৬:২৮ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

ফয়জুর রহমান
হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ)  প্রতিনিধি

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বন্যা পরিস্থিতির ৮ম দিন আজ। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বন্যার পানি অনেকটা কমে গেলও  নড়াইল, বিলডোরা ও শাকুয়াই ইউনিয়নের অধিকাংশ যায়গায় ও  কৈচাপুর, ধুরাইল,আমতৈল, স্বদেসী ইউনিয়নের কিছু কিছু জায়গায় এখনো পানি বন্দি কয়েক হাজার মানুষ।

তবে উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়ন, ১নং ভুবনকুড়া ইউনিয়ন, ২নং জুগলী ইউনিয়ন, ৫নং গাজীরভিটা ইউনিয়নের, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পানিবন্দী মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে।

কৈচাপুর, ধারা, ধুরাইল, স্বদেশী, নড়াইল, বিলডোরা, শাকুয়াই, হালুয়াঘাট ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দাসহ বিভিন্ন গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। রাস্তা, মাঠ-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। স্কুল, মাদ্রাসা, ঘর-বাড়ির চারপাশেই পানি। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমিসহ সবজি ক্ষেত। বিভিন্ন পুকুর তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন মানুষজন। অপরদিকে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের সংকট। ঘরের মধ্যে পানি প্রবেশের কারনে রান্নার কাজও ব্যাহত হচ্ছে, তাই অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে তারা।

ধুরাইল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের নয়পাড়া, বনপাড়া, ঝাউগরা, রামনগর, কন্যাপাড়া, ডুবারপাড়, চরগোকপুর, মোকামিয়ার লোকজন পানিবন্দি। অবস্থা চরম সংকটাপন্ন। এদিকে হালুয়াঘাটের পূর্ব-দক্ষিণাংশের খন্দকাপাড়া, পূর্ব কালিয়ানিকান্দা, কাওয়ালীজান, উত্তর গোপীনগর, দক্ষিণ গোপীনগর, মহাজনীকান্দা, বটগাইচ্ছাকান্দা, বাদশা বাজার, খরমা, বাদে খরমা, খামারবাসা, আলিশাহ বাজার, বোর্ড বাজার, চায়নামোড়, আতুয়াজঙ্গল, জৈনাটি, দারিয়াকান্দা, পলাশকান্দা, জামবিল ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো এবং শাকুয়াই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বন্যা পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।

হালুয়াঘাট উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন  ত্রাণকার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আফজাল এইচ খান ও সালমান ওমর রুবেল বন্যার্তদের মাঝে পৃথকভাবে রান্না করা খাবার দিয়েছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির আব্দুল করিমের নেতৃত্বে হালুয়াঘাটের বিভিন্ন গ্রামে রান্নাকরা খাবার ও শুকনা খাবার বিতরণ করেছেন দলটি।

দেশের আলোচিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন মেহমানখানা, ঢাকাস্থ হালুয়াঘাট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, সারা সংস্থা ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হালুয়াঘাট শাখা, বৃহত্তর মোমেনশাহী ইত্তেফাকুল উলামা হালুয়াঘাট শাখা, ঢাবির হালুয়াঘাট স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হালুয়াঘাট শাখা, হালুয়াঘাট হিলফুল ফুযুল সেবা সংস্থা, গাসু হালুয়াঘাট শাখা, বাগাছাস হালুয়াঘাট শাখা, তাবলিগ জামায়াত, আহমদ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহ মোট ৫০ টি সংগঠন  ত্রাণকার্যক্রমে অংশ নিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, আল্লাহ আমাদেরকে মানুষের সহোযোগিতা করার মত সমার্থ  দিলেও এবারের বন্যায় আমরা এমন বিপাকে পরেছি যে আজকে আমাদের বাড়ি ঘর সবকিছু তলিয়ে যাওয়ার কারণে আমরা রান্নাবান্না করতে পারছি না। ফলে সন্তানাদি নিয়ে অন্যের ত্রানের আশায় পথের দিকে চেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। অপর আরেক জন বলেন ৭ দিন  যাবত আামাদের বাড়িতে রান্না করার মত ব্যবস্থা নেই। ত্রাণ  হিসেবে অনেকেই শুকনা  চিড়া মুড়ি দিচ্ছেন কিন্তু সাথে বিশুদ্ধ পানি না দেওয়াই সেগুলো খেতে কষ্ট হচ্ছে। এগুলো খেয়ে আর কতদিন থাকা  সম্ভব।

এনএ/