‘দুর্গাপূজা সার্বজনীন উৎসব নয়’
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর, ২০২৪, ০৭:১৯ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

আবদুল্লাহ ফিরোজী, সাভার প্রতিনিধি:

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, এক ধর্মের উৎসব অন্য ধর্মের জন্য নয়। ধর্ম যার ধর্মীয় উৎসব তার। সুতরাং দুর্গাপূজা সার্বজনীন উৎসব নয়। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের শুরুর যুগে এ জাতীয় ধর্মাচারের বিরোধিতা করেই ইসলামের তাওহীদ তথা একত্ববাদের দিকে মানুষকে আহবান করেছেন এবং সকল প্রকারের মূর্তি ও পূজাকে শিরক আখ্যা দিয়ে তা থেকে বেঁচে থাকার তাগিদ দিয়েছেন। আকীদা বা বিশ্বাসগত দিক থেকে একজন মুওয়াহহিদ তথা একত্ববাদী মুসলিমের জন্য পূজা-জাতীয় ধর্মাচারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, সমর্থন করা এবং সেটিকে নিজের উৎসবের বিষয় মনে করার কোন সুযোগ ইসলামে নেই।

সাভার উপজেলাধীন ইত্তিহাদুল উলামা তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন শাখার জরুরি বৈঠকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও যাদুরচর মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা আলী আকবর কাসেমী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

জামিয়া ইসলামিয়া হারুনিয়া মাদরাসা মিলনায়তন অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইত্তিহাদুল উলামা তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ভূঁইয়াবাড়ি জামে মসজিদের খতীব মাওলানা আবু সাঈদ। সাধারণ সম্পাদক ও ইমাম আজম আবু হানীফা রহ. মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আব্দুল কুদ্দুসের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন হারুনিয়া মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আলী আশরাফ তৈয়ব ও যমযমনূর গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ।

বৈঠকে আগামীকাল শুক্রবার জুমার বয়ানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে মুসল্লিদের সচেতন করতে খতীব সাহেবদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করা হয়। ১. মুসলমান কর্তৃক দুর্গাপূজায় অংশগ্রহণ, ডোনেশন ও শুভেচ্ছা জানানো হারাম। ধর্ম যার ধর্মীয় উৎসব তার। ২. দুর্গাপূজা উপলক্ষে বানানো দ্রব্যাদি খাওয়ার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন। ৩. হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে তাদের ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারে, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা। ৪. কোন দুষ্কৃতিকারী যেন পূজামন্ডপে হামলা ভাংচুর করে আইন শৃংখলার অবনতি ঘটাতে না পারে এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে যথাযথ সহযোগিতা করা। ৫. দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে প্রচুর পরিমাণ খাসি গায়রুল্লাহ'র নামে বলি দেওয়া হয় বা শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় জবেহ দেয়া হয় না। দুর্গাপূজার এসব খাসির মাথা, পায়া ও ভুঁড়ি বাজারগুলোতে দেদারছে বিক্রি হয়। অনেক মুসলমান না জেনে এগুলো ক্রয় করে হারাম ভক্ষণ করে থাকেন। এই ব্যাপারে মুসল্লিদের খুব বেশি সতর্ক করা।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, ইসলামের স্পষ্ট নীতি হচ্ছে, যে কোন ধর্মাবলম্বী নিজস্ব গণ্ডির মধ্যে তার ধর্ম পালন করুক। নিজস্ব পরিধির মধ্যে তার ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা তার রয়েছে। ইসলাম এক্ষেত্রে কোন প্রকার অসহযোগিতা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না এবং কোন মুসলমানের জন্যও এতে বিঘ্ন সৃষ্টি করার অধিকার নেই। সুতরাং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার এবং ধর্মীয় আচার-আচরণকে এক করে দেখার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ নেই। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, প্রত্যেক ধর্মের নিজস্ব। এ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব ও আনন্দও তাদের নিজস্ব। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যদের ধর্মীয় উৎসবকে সার্বজনীন মনে করে তাতে যোগ দেওয়া, সেগুলোকে পছন্দ করা, সে উৎসবকে নিজের উৎসব মনে করা একদমই শরীয়ত সমর্থিত নয়।

বৈঠকে তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক আইম্মায়ে মাসাজিদ ও মাদরাসার মুহতামিম উপস্থিত ছিলেন।

হাআমা/