জুমার বয়ানে সাঈদী ও মামুনুল হককে নির্যাতনের কথা বলায় চাকরি গেল ইমামের
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:২০ রাত
নিউজ ডেস্ক

জুমার নামাজের খুতবার বয়ানে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা মামুনুল হকসহ আলেম-ওলামাদের ওপরে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের কথা বলার কারণে এক মসজিদের ইমাম চাকরি হারিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার। ভুক্তভোগী ইমামের নাম মাওলানা মো. ওসমান গনি। তিনি উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের পীরগাছি জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম। শনিবার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাকে মৌখিকাভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর আগে গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের খুতবার বয়ানে আলেম-ওলামাদের ওপরে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের কথা বলেন।

মুসল্লিরা জানান, পীরগাছি জামে মসজিদে শুক্রবার খুতবায় সিরাত নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার একপর্যায়ে যুগে যুগে নবী-রাসুল, পীর-মাশায়েখদের ওপর জুলুম নির্যাতনের বর্ণনায় মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ও মামুনুল হকের কথা বলেন ইমাম। এই সময় কিছু মুসল্লি ইমাম সাহেবকে খুতবারত অবস্থায় অপমান অপদস্ত করেন। এমনকি কাউকে না জানিয়ে এক প্রকার অপমানজনকভাবে ইমামকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নেওয়া দরকার ছিল। ইমাম সাহেবকে সসম্মানে বিদায় দেওয়া যেত। আমরা আলেম-ওলামাদের সম্মান দিতে চাই। আমরা খতিবকে সসম্মানে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।

ইমাম মাওলানা মো. ওসমান গনি বলেন, গত জুমায় আলোচনার বিষয় ছিল রাসুল (সা.)-এর সংগ্রামী জীবন নিয়ে। তার ধারাবাহিকতায় পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে আলোচনা পেশ করেছি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.)-সহ একাধিক নবী-রাসুলের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, মুসা (আ.) দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে অনেক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সুতরাং আপনিও জুলুম নির্যাতনের শিকার হবেন। তবে বিজয় আপনাদের হাতেই আসবে, যারা বিরোধিতা করবে ফেরাউনের বংশধরের মতো পরাজিত হবে। হযরত ইউসুফকে (আ.)-নারী কেলেঙ্কারি দিয়ে ফাঁসানো হয়েছিল। উদাহারণ হিসেবে বলেছিলাম, যারা কোরআনের কথা বলবে তাদের ওপরে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। মাওলানা মামুনুল হকের ওপরে নারী কেলেঙ্কারির মামলা দেওয়া হয়েছিল। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল এবং তাকে শহীদ করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে দুই আলেমের কথা বলায় তারা আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি সামনের জুমার নামাজে এসে নামাজ পড়িয়ে বিদায় নিতে চাইলেও সেই সুযোগ দেয়নি।

মসজিদ কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, হুজুর খুতবায় কোরআন-হাদিসের কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা মামুনুল হকের কথা বলায় মসজিদের আওয়ামী লীগপন্থি কিছু লোক হট্টগোল শুরু করে। এটা সামনের জুমায় বসে সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু কিছু লোক হুজুরকে রাখবে না বলায় আমি হুজুরকে বুঝিয়ে তার বেতন দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে আওয়ামী লীগপন্থি লোকগুলোর নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে রাজি হননি।

হাআমা/