আমেরিকায় আন্তর্জাতিক ইসলামি অর্থনীতি বিষয়ক কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশি ৩ আলেম
প্রকাশ:
০৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:০৭ রাত
নিউজ ডেস্ক |
|| হাসান আল মাহমুদ || আমেরিকার টেক্সাস হিউস্টনে দ্বিতীয় বারের মতো ‘নর্থ আমেরিকা কনফারেন্স অন ইসলামিক ফ্যাইনান্স ২০২৪’ আন্তর্জাতিক ইসলামি অর্থনীতি বিষয়ক কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশি ৩ আলেম। তারা হলেন মুফতি ড. ইউসুফ সুলতান, মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম ও মুফতি মায়মুন আহমেদ। অক্টোবর মাসের ১৮-১৯ তারিখে দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এ কনফারেন্সে প্রবন্ধ পেশ ও পাঠে আমন্ত্রণ পেয়েছেন এ তিনজন আলেম। তারা যৌথভাবে প্রবন্ধ তৈরি করে জমা দিয়েছেন। তাদের প্রবন্ধের বিষয় হচ্ছে: Meeting the need for house financing in North America Islamic approaches and solutions। আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) আওয়ার ইসলামকে এ ব্যাপারে তথ্য নিশ্চিত করেছেন কনফারেন্সে আমন্ত্রণ পাওয়া মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম। তিনি জানান, ইনশাআল্লাহ ৯ অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দিব আমি। মুফতি ইউসুফ সুলতান যাবেন মালয়েশিয়া থেকে। আর মুফতি মায়মুন যায়েদ আমেরিকাতেই থকেন, সেখান থেকে কনফারেন্সে অংশ নিবেন। এদিকে মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুমের ছাত্র জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসার ইফতা (ইসলামি আইন শাস্ত্র) বিভাগে অধ্যয়নরত মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, তাঁরা (মুফতি ড. ইউসুফ সুলতান, মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম ও মুফতি মায়মুন যায়েদ) তিনজনই জামিয়া শরিয়া মালিবাগ ঢাকার কৃতি সন্তান। তাদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কওমি আলেমদের বিশ্বমঞ্চে পদচারণার আরও একটি উদাহরণ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, তাঁরা কনফারেন্সের আগে-পরে ডালাস, হিউস্টন, নিউ জার্সি ইত্যাদি এলাকাগুলোতে ইসলামী ফাইন্যান্সের উপর বিভিন্ন সেশন নিবেন। ফেরার পথে পাকিস্তান হয়ে ফিরবেন। সেখানে বিশ্ববরেণ্য আলেম মুফতি তাকি উসমানী-এর সাথে তাদের সাক্ষাতের একটা শিডিউল রয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া, তাঁরা উক্ত কনফারেন্সকে কেন্দ্র করে আমেরিকার নিউইয়র্কের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা দারুল উলুম নিউইয়র্কে চার/পাঁচদিনব্যাপী ইসলামী ফ্যাইনান্স উপলক্ষে বিভিন্ন সেশন ও ওয়ার্কশপ পরিচালনা করবেন। আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, পাশাপাশি স্যান্ডার্ড চার্টাড কর্তৃক পাকিস্তানে আয়োজিত ‘গ্লোভাল শরিআহ মজলিস-২০২৪’ প্রোগ্রামে তাঁদের উপস্থিত হওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে মুফতি ইউসূফ সুলতান একজন আলোচক হিসাবেও থাকবেন বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, মুফতি ড. ইউসুফ সুলতান বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের নানা দেশে ইসলামী অর্থনীতিতে একজন সুপরিচিত ব্যক্তি। একমাত্র বাঙ্গালী কওমি আলেম হিসাবে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড এর আন্তর্জাতিক শরিআহ অ্যাডভাইজর। অ্যাওফি বাহরাইনের মাস্টার ট্রেইনারসহ নানা দুর্লভ পদের অধিকারী। সম্প্রতি ইসলামী ফাইন্যান্সে তিনি মালয়েশিয়ার ইনসিফ থেকে পিএইচ.ডি সম্পন্ন করেছেন। মুফতি মায়মুন বয়সে তরুণ। মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুমের হাতে গড়া শিষ্য। ইসলামী অর্থনীতিতে হাতেখড়ি তার হাতেই। তিনিও ভবিষ্যত স্কলার হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। ইসলামী অর্থনীতিতে পারদর্শী আলেমদের মধ্যে অন্যতম হলেন তারুণ্যদীপ্ত সম্ভাবনাময় স্বাপ্নিক ও প্রতিভাবান আলেম মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম হাফিজাহুল্লাহ। সহকারি সিনিয়র মুফতি জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, পরিচালক আই এফ এ কনসালটেন্সি। এদেশের ইসলামী অর্থনীতিতে তার রয়েছে সক্রিয় পদচারণা। তাঁর রাত-দিনের ভাবনা কিভাবে এদেশের অর্থনীতিকে শরিয়াসম্মত উপায়ে পরিচালনা করা যায়। ইসলামী অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরে (যেমন: ব্যাংকিং বীমা- তাকাফুল ইত্যাদি) নিরলস পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এ প্রতিভা এদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বরং, এ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও অবদান রাখতে শুরু করেছে। যার ফলশ্রুতিতে তিনি অ্যাওফি বাহরাইন কর্তৃক অনুমোদিত শরিয়া পরামর্শক ও নিরীক্ষক। সাথে সাথে অ্যাওফির এক্সাম রিভিউ কমিটি ও শরিয়া গভর্নেন্স বডির অন্যতম সদস্য। গত বছর এসময়ে প্রথম আয়োজিত ‘নর্থ আমেরিকা কনফারেন্স অন ইসলামিক ফ্যাইনান্সে’ সর্বপ্রথম বাংলাদেশী কওমী আলেম হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ইংরেজিতে প্রবন্ধ পাঠ করেন। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল,Preference share and 'Tanazul' theory: a Shariah analysis। এটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য এবং বিশেষকরে কওমি মাদ্রাসার জন্য বড় গর্বের বিষয়। হাআমা/ |