মুমিনের সফল জীবন
প্রকাশ:
১৩ জুলাই, ২০২৪, ০৪:৫৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
|| নাজমুল হুদা মজনু || মানুষের জীবনের সফলতার মানদণ্ড কী; এ কথার উত্তরে ৯৯ শতাংশ হয়তোবা বলবেন প্রাচুর্যের কথা। তাই সম্পদ অর্জনে চলে মানুষের হরদম হা হুতাশ। আর এ জন্য নিরন্তর দৌড়ঝাঁপে অস্থির হয়ে ক্লান্তি-শ্রান্তি অতঃপর বিস্বাদ বিষণ্ণতা। সুখের অন্বেষণে অসুখের আগমনে অনেকের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার অমানিশা। উল্লিখিত সবধরনের সমস্যা-সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে অব্যর্থ ওষুধ হলো মহীয়ান-গরিয়ান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পাঠানো বাণী আল কুরআন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে বলেন, যে ব্যক্তি (হেদায়াতের আলোকে নিজের জীবন) পরিশুদ্ধ করে নিয়েছে, সে অবশ্যই সফলকাম হয়েছে, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন- আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে মানুষের চিন্তাচেতনার বিকাশের মাধ্যমে শিক্ষা দেন যে, তার ওপর ঈমান আনা অত্যাবশ্যক। পাশাপাশি আল্লাহ তায়ালা প্রেরিত অন্যান্য নবীর প্রতি ঈমান আনাও মুমিনের কর্তব্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পরম সত্তার সাথে বাক্যবিনিময়কারী নবী মূসা কালিমুল্লাহর একটি কাহিনী কুরআন মাজিদে বর্ণিত হয়েছে। বানি ইসরাইলের নবী মূসা আলাইহিস সালাম অত্যাচারী ফেরআউনের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মাদইয়ানের দিকে রওনা হলেন। এর পরের ঘটনা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআন মাজিদে বর্ণনা করেছেন। চলার পথে ঘটনাচক্রে নিয়ামতপ্রাপ্তির এক আলামতের দেখা মিলল। অবশেষে যখন সে মাদইয়ানের (একটি) পানির (কূপের) কাছে পৌঁছলাে, তখন দেখলাে তার পাশে অনেক মানুষ, তারা (পশুদের) পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের অদূরে সে দু'জন রমণীকে দেখতে পেলাে, যারা (নিজ নিজ পশুদের) আগলে রাখছে, সে (তাদের) জিজ্ঞেস করলাে, তােমাদের কী হলাে (তােমরা পশুদের পানি খাওয়াচ্ছাে না)? তারা বললো, আমরা (পশুদের) পানি খাওয়াতে পারবাে না, যতক্ষণ না এ রাখালরা (তাদের পশুদের) সরিয়ে না নিয়ে যায় এবং আমাদের পিতা একজন বৃদ্ধ মানুষ বলে আমরা পশুদের পানি খাওয়াতে নিয়ে এসেছি। (এ কথা শােনার পর) সে ওদের (পশুগুলোকে) পানি খাইয়ে দিলাে, তারপর (সরে) একটি (গাছের) ছায়ার দিকে গেল এবং (আল্লাহকে) বললো, হে আমার মালিক, (এ মুহূর্তে) তুমি (নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে) যে নেয়ামতই আমার ওপর নাজিল করবে, আমি একান্তভাবে তারই মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবো। সে দু'জন (রমণীর) একজন তার (পিতাকে) বললাে, হে (আমার) পিতা একে বরং তুমি (তোমার) কাজে নিয়ােগ করাে, কেননা তােমার মজুর হিসেবে সে (ব্যক্তিই) উত্তম (বলে প্রমাণিত) হবে, যে হবে (শারীরিক দিক থেকে) শক্তিশালী এবং (চরিত্রের দিক থেকে) বিশ্বস্ত। সে (এতেই রাজি হলাে এবং) বললাে (ঠিক আছে), আমার এবং আপনার মাঝে এ চুক্তিই (পাকা হয়ে) থাকলাে; আপনার দেয়া দু'টি মেয়াদের যেকোনাে একটি যদি আমি পূরণ করি, তাহলে (আপনার পক্ষ থেকে) আমার ওপর কোনাে বাড়াবাড়ি করা হবে না (এ নিশ্চয়তাটুকু আমি চাই); আমাদের এ কাজের ওপর আল্লাহ তায়ালাই সাক্ষী (হয়ে থাকলেন)। যখন সে আগুনের কাছে পৌঁছালাে, তখন উপত্যকার ডান পাশের পবিত্র ভূমিস্থিত একটি গাছ থেকে (গায়বি) আওয়াজ এলো, হে মূসা, আমিই আল্লাহ সৃষ্টিকুলের একমাত্র মালিক, নবী-রাসূলদের বর্ণাঢ্য হায়াতকালে হাজারো নেয়ামতে পরিপূর্ণ সময় যেমন অতিবাহিত হয়েছে তেমনি দুঃখ-কষ্ট আর অবিরাম অগণিত পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন তারা। তাই যেকোনো প্রতিকূল অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করা মুমিনের বড় বৈশিষ্ট্য। একটি প্রবাদ আছে— শেষ ভালো যার সব ভালো তার। তাই তো আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআনুল কারিমে আশার বাণী বর্ণনা করে বলেন, অবশ্যই তোমার পরবর্তীকাল আগের চেয়ে উত্তম। (আদ-দুহা : ৪) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি অবতীর্ণ বিশ্ববাসীর হেদায়াতের সনদ কুরআন মাজিদে দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরো বলেন, (এই) সেই (মহা) গ্রন্থ (আল কুরআন), তাতে (কোনো) সন্দেহ নেই, যারা (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করে, (এই কেতাব কেবল) তাদের জন্যই পথপ্রদর্শক, লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক এনএ/ |