এক দফা দাবিতে ফের বাংলা ব্লকেডের কর্মসূচি আজ
প্রকাশ:
০৮ জুলাই, ২০২৪, ১২:১২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজও সারাদেশে বাংলা ব্লকেড পালন করবেন। পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট চলবে। এ সময় শিক্ষার্থীরা চার দফা বাদ দিয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। তা হলো- সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যুনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। রোববার শাহবাগ থেকে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীদের দেওয়া তথ্যমতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর মোড়, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল মোড় অবরোধ করবেন। ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্হস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত ও সাইন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের শিক্ষার্থীরা চানখারপুল মোড়ে অবস্থান নেবেন। এছাড়া, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও সড়কে অবরোধ করবেন। এক দফা দাবি তবে এবার ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণিসহ সকল গ্রেডে কোটাকে যৌক্তিক পরিমাণে সংস্কারের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি-সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটা ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা সংস্কার করতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। পরে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এর প্রতিবাদে গত একসপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। এনএ/ |