প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা
প্রকাশ:
৩০ জুন, ২০২৪, ১১:৩২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রণিধানযোগ্য কারণ হিসেবে পবিত্র কোরআনে আমরা দেখি যে মানুষের কর্মকাণ্ডের ফল হিসেবেই দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসে। যেমন : আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে জলে ও স্থলে বিপর্যয় দেখা দেয়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কিছু কিছু কৃতকর্মের ফল প্রদান করে থাকেন, যেন তারা পাপ থেকে ফিরে আসে।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৪১) অথচ আল্লাহ তায়ালা নিজ গুণে মানুষের নানা ধরনের অপরাধ ক্ষমা করে দেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তা তো তোমাদের কৃতকর্মের ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ৩০) ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্পের মতো মসিবত আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। বান্দার কৃতকর্মের কারণেই আল্লাহ তায়ালা এ ধরণের পরীক্ষার সম্মুখীন করেন এবং বান্দাদের সতর্ক করেন। এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি মুসলমানদের জন্য তাওবা-ইস্তেগফার, সদকা ও দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এখানে দুর্যোগের ক্ষতি থেকে বাঁচতে কিছু সুন্নাহসমর্থিত আমল তুলে ধরা হলো। ১. ধৈর্য ধারণ আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ করেন, নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের অপরিমিত পুরস্কার দেয়া হবে। (সুরা যুমার: ১০) ২. তাওয়াক্কুল ৩. তাওবা ও ইস্তেগফার ৪. সদকা ৫. সচেতনতা অবলম্বন ৬. সহযোগিতা ৭. দোয়া اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।’ অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এই ঝড়ের কল্যাণ, এর মধ্যস্থিত কল্যাণ, এর সঙ্গে প্রেরিত কল্যাণ। আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এই ঝড়ের অনিষ্ট থেকে, এর মধ্যস্থিত অনিষ্ট থেকে, এর সঙ্গে প্রেরিত অনিষ্ট থেকে। আয়েশা রা. বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইত, রাসুলুল্লাহ সা.-এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং দোয়াটি পড়তেন। (বুখারি: ৩২০৬; মুসলিম: ৮৯৯; তিরমিজি: ৩৪৪৯) পবিত্র কুরআনে বর্ণিত এই দোয়াটিও পড়বেন- رَبَّنَا اکۡشِفۡ عَنَّا الۡعَذَابَ اِنَّا مُؤۡمِنُوۡنَ ‘রাব্বানাকশিফ আন্নাল আজাবা ইন্না মুমিনুন।’ অর্থ: ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর থেকে আপনার শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি।’ (সুরা দুখান: ১২) এছাড়াও যেকোনো মসিবতে দোয়া ইউনুস পড়া বিশেষ আমল। দোয়াটির ফজিলত বর্ণনায় হজরত ইউনুস আ.-কে বিপদমুক্ত করা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁকে দুশ্চিন্তামুক্ত করে দিলাম। আমি এভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৭) আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন। এনএ/ |