বিশ্ববাজারে চিনির দাম ৪০ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে কমেছে মাত্র ৩ শতাংশ
প্রকাশ: ২৬ জুন, ২০২৪, ১১:২৫ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

গত বছরের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে বিশ্ববাজারে চিনির দাম ৪০ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে কমেছে মাত্র ৩ শতাংশ। দেশের বাজারে চিনির দাম না কমার পেছনে জাহাজ খরচ বৃদ্ধি পাওয়া, ডলার সংকট, এলসির সীমাবদ্ধতা, ডলারের রেট এবং কাস্টমস ডিউটিকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা। 

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, গত বছরের মে মাসে চিনির বৈশ্বিক গড় দামের সূচক ছিল ১৫৭ দশমিক ২ পয়েন্ট। চলতি বছরের মে মাসে এই সূচক কমে ১১৭ দশমিক ১ পয়েন্ট হয়েছে। অর্থাৎ এক বছরে সূচকের মান ৪০ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের (আইএসও) তথ্যও বলছে, বিশ্ববাজারে ধারাবাহিকভাবে চিনির দাম কমেছে। 

দেশের বিদেশি ঋণ কমেছে ১.৩৪ বিলিয়ন ডলারদেশের বিদেশি ঋণ কমেছে ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার
তবে বিশ্ববাজারের দাম কমার সুফল মিলছে না দেশের বাজারে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে দেশের বাজারে চিনির দাম কমেছে মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ। টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মে মাসে দেশের বাজারে চিনির সরকার নির্ধারিত খুচরা মূল্য ছিল ১৪০ টাকা। চলতি বছরের মে মাসে মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ কমে ১৩৫ টাকা হয়েছে। 

জেলের ছাদ ফুটো করে পালালেন ৪ ফাঁসির আসামিজেলের ছাদ ফুটো করে পালালেন ৪ ফাঁসির আসামি
ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর এক টন অপরিশোধিত চিনির মূল্য ছিল প্রায় ৭০০ ডলার। চলতি বছরের মে মাসে তা কমে ৫৩০ ডলারে নেমে আসে। অর্থাৎ ৬ মাসের ব্যবধানে চিনির দাম ১৭০ ডলার কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, প্রতি ডলারের দাম ১১৭ টাকা হলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি ডলারের জন্য তাদের গুনতে হচ্ছে ১২৫ টাকা। প্রতি ডলার ১২৫ টাকা দরে এক টন চিনির আমদানি মূল্য হয় ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনির আমদানি মূল্য ৬৬ টাকা। এর সঙ্গে জাহাজ খরচ, আমদানি শুল্ক, ভ্যাট এবং কোম্পানির আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হয়। এতে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ছে না বলে জানান দেশের চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। 

সাহায্যের জন্য সহকর্মীদের আবেগঘন বার্তা পাঠাচ্ছেন মতিউরসাহায্যের জন্য সহকর্মীদের আবেগঘন বার্তা পাঠাচ্ছেন মতিউর
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি চিনির শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ঘোষণায় অন্যান্য শুল্ক বহাল রেখে শুধু কাস্টমস ডিউটি টনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ (অপরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে) থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। পরিশোধিত চিনির কাস্টমস ডিউটি ৩ হাজার থেকে কমিয়ে ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর একই প্রক্রিয়ায় অপরিশোধিত চিনির কাস্টমস ডিউটি ৩ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে করা হয়েছিল ৩ হাজার টাকা।

ছাগলে খেল মতিউরের কোটি টাকার সম্পদছাগলে খেল মতিউরের কোটি টাকার সম্পদ
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশের কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর সময় বিশ্ববাজারের অজুহাত দিয়ে থাকে। আর বিশ্ববাজারে দাম কমলে ভ্যাট, ডলার সংকট, ডিউটি ফির অজুহাত দিয়ে দেশে জিনিসের দাম কমায় না। 

তিনি বলেন, কাস্টমস ডিউটি তো দেশে কমানো হয়েছে। কিন্তু তার প্রভাব তো বাজারে দেখা যায়নি। ট্যারিফ কমিশন ব্যবসায়ীদের হয়ে এনালাইসিস করে। তারা যেহেতু একটি পক্ষকে খুশি করার জন্য এনালাইসিস করে থাকেন, সেহেতু ভোক্তাদের স্বার্থ উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। ট্যারিফ কমিশনের এনালাইসিস সঠিক হচ্ছে না।

এমএন/