কুরবানি বিষয়ে দেওয়া ভুল ফতোয়া থেকে রুজু , প্রশংসিত মুফতী ফরায়েজী
প্রকাশ: ১৫ জুন, ২০২৪, ০৯:৩৫ রাত
নিউজ ডেস্ক

|| হাসান আল মাহমুদ ||

কুরবানি বিষয়ে দেওয়া একটি মাসয়ালা ভুল ছিল বলে উল্লেখ করে ক্ষমা চাইলেন দেশের গবেষক আলেম ফতোয়ার নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট আহলে হক মিডিয়ার কর্ণধার মুফতী লুৎফর রহমান ফরায়েজী।

সম্প্রতি ফেসবুকে নিজস্ব আইডিতে পোস্ট করে তিনি বলেন,‘ কুরবানীর এ মাসআলা এতোদিন ভুল বলেছি! ক্ষমা চাই আল্লাহর কাছে এবং যারা জানতে চেয়েছেন তাদের কাছেও!’

মাসায়ালাটি হল

প্রশ্ন: সাহেবে নেসাব। তথা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। কিন্তু তার টাকা কারো কাছে ঋণ দেয়া। কিংবা এমন কারো কাছে বা কোন স্থানে রাখা যেখান কাছ থেকে কুরবানীর দিনসমূহে বা আগে টাকা সংগ্রহ করে কুরবানীর পশু ক্রয় করা সম্ভব নয়।

এমন ব্যক্তি কি ঋণ করে কুরবানী করবে?

এ প্রশ্নের উত্তর প্রসঙ্গে মুফতী লুৎফর রহমান ফরায়েজী লিখেন, ‘এই প্রশ্নটি অধমের কাছে যারাই করেছেন, আমি জবাব দিয়েছি 'কুরবানী দিতে হবে'। কারণ উক্ত ব্যক্তির উপর যাকাত আবশ্যক থাকে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কুরবানী আবশ্যক হবার ফাতওয়া এতোদিন দিয়েছি।’

সঠিক উত্তর কী হবে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে মাফ করুন। আমার জানা এ মাসআলাটি ভুল। সঠিক হলো: এমন ব্যক্তির উপর যাকাত আবশ্যক থাকলেও কুরবানী করা আবশ্যক থাকে না। তবে যদি কুরবানীর দিনসমূহে কোনভাবে কুরবানীর পশুক্রয় পরিমাণ টাকা সংগ্রহ হয় ঋণদাতা থেকে গ্রহণ বা অন্য কোনভাবে তাহলেই কেবল তার উপর কুরবানী আবশ্যক হবে’।

‘এছাড়া কুরবানীর দিনসমূহ শেষ হয়ে যাবার পর যদি টাকা সংগ্রহ হয়, তাহলেও তার উপর কোন কিছু আবশ্যক হবে না। এটাই বিশুদ্ধ মাসআলা।’ -যুক্ত করেন তিনি।

মুহাক্কিক এই আলেম আরও বলেন, ‘এতোদিন ভুল মাসআলা বলায় আমি রব্বে কারীমের কাছে ক্ষমা চাই। সেইসাথে যাদেরকে এই ভুল মাসআলা বলেছি তাদের কাছেও ক্ষমাপ্রার্থী। দয়া করে অন্যদের কাছে মাসআলাটি পৌঁছে দিবেন। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।’

বিস্তারিত ফিক্বহী দলীলসহ জানতে পড়ুন: https://ahlehaqmedia.com/14107-2/

শরিয়তের মাসায়ালা বিষয়ে এমন সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়ায় অনলাইন-অফলাইনে প্রশংসার ঝড় ওঠে মুফতী লৎফর রহমান ফরায়েজীকে নিয়ে।

মুফতী আনওয়ার শাহ আনসারী নামে একজন লিখেন, ‘মাশা-আল্লাহ প্রিয় ভাই!! মাসয়ালাটি সংশোধনী দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক মোবারকবাদ। এতটা বিনয়ী প্রকাশ করেছেন যে একজন আসামী যেভাবে ক্ষমা চায়, জ্বি অবশ্যই ভুল মাসয়ালার জন্য আমরা আল্লাহর আদালতে জাহান্নামের আসামী। তাই দুনিয়ার ভুলের জন্য যতটুকু ক্ষমা চাওয়ার নম্রতা প্রকাশ করা হয়, দ্বীনি ভুলের জন্য তার চেয়ে বেশি নম্র হয়ে মাফ চাইতে হয়। আর এটাই ওলামায়ে দেওবন্দের ইখলাস এবং গুন। মহান রব আপনাকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুক এবং ইলম আমলে বারাকাহ দান করুক। উম্মাহর রাহবার হিসেবে কবুল করুক।’

H.M. Mohammad Ullah লিখেন, ‘কিছুদিন পূর্বে একজন আলেমের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল, কোরবানি ওয়াজিব না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এবং উক্ত মাসআলা পেশ করেছিলাম। শুকরিয়া। আপনার ইলমে আল্লাহ বারাকা দান করুন আমীন ‘

Mokarram Hossain লিখেন, ‘মাশা-আল্লাহ প্রিয় শায়েখ, প্রকৃতপক্ষে আহলে ইলেমরা এমনই হয়ে থাকেন।’

মুফতি সাইফুল্লাহ মালয়েশিয়া লিখেন, ‘আল্লাহু আঁকবার! এটাই তো আকাবিরদের স্পষ্ট নমুনা, যারা প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করতে একটুও দ্বিধা করতেন না। আপনি তো হাজার বছর আগের জামানার ইতিহাস পুনরায় ক্বায়েম করলেন, বা-রকাল্লাহু ফি হায়াতিক।’

হাআমা/