‘একাধিক বিয়ে; অফলাইন-অনলাইনে সংগ্রামে পরিণত করার বিষয় নয়’
প্রকাশ:
১০ মে, ২০২৪, ১০:৩২ রাত
নিউজ ডেস্ক |
|| নুর আলম সিদ্দিকী || বিবাহ একটি পবিত্র বন্ধন। আল্লাহ তায়ালার বিধান। প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে সামর্থ্য অনুযায়ী একাধিক বিবাহের অনুমতি দিয়েছে ইসলাম। একাধিক বিয়ে করলে যথাযথ সম্মান, আচরণ ও মর্যাদায় সমতা রক্ষা করারও নির্দেশনা রয়েছে ইসলামে। কিন্তু বর্তমানে ‘মাসনা, সুলাসা, রুবায়া’ তথা একাধিক বিয়ে করার প্রমোট-উৎসাহ লক্ষ করা যাচ্ছে। একাধিক বিয়ে করার সামর্থ্য, শর্তাবলী ইত্যাদি বিষয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের চিন্তাবিদ তরুণ আলেমগণ। তাদের মতে, ‘মাসনা কলোনীর নামে একশ্রেণীর মানুষ খাহেশাতের মোহে পড়ে যা করছেন তা শরঈ বিধানকে বিকৃত করার শামিল। মাসনা স্ত্রীদের রাখার জন্য আলাদা কলোনি করা হলে এই সংস্কৃতি আর রক্ষিতা সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য কী থাকলো?’ বিশিষ্ট লেখক সোশ্যাল এক্টিভিজ তরুণ আলেম সাইমুম সাদী বলেন, ‘প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে একাধিক বিবাহ করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কিন্তু সমাজে একাধিক বিয়ে নিয়ে অনেক মিস ইউজ হচ্ছে। একজন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করা। আবার আরেকজন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্য আরেকজনকে বিবাহ করা। এটাকে মিস ইউজ বলে’। তিনি বলেন, এক শ্রেণীর মানুষ মাসনা ছুলাছা রুবাআ'র ফজিলতের গল্প বলে আর তালাক দিয়ে 'সিট খালি আছে' এইকথা বলে আরও বিয়ের জন্য ফুসলাচ্ছে এটা ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ বিধানের অপব্যবহার ছাড়া কিছুই নয়’। চারজন স্ত্রী রাখা ইসলামে জায়েজ আছে কিন্তু এর মিস ইউজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাইমুম সাদী’র মতে, ‘খাহেশাতের কারণে বিবাহ করে পরবর্তীতে তাদের মাঝে সমতা রক্ষা করতে পারে না। যার ফলে একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে সমাজে খারাপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। এটাকে এভাবে মিস ইউজ করা যাবে না। তাছাড়া, তথাকথিত ‘মাসনা কলোনী’ নামে যা চলছে এর দ্বারা ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলাম সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করার সুযোগ পায়। এটা একটি নিয়মের মধ্যে আসা দরকার’। যুগসচেতন শিক্ষাবিদ আলেম মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফি বলেন, ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে এই জায়গাটা খুবই সুন্দর যে, যারা সামর্থ্যবান এবং স্ত্রীদের পারস্পারিক হক আদায় করে চলতে পারবে, তাদের জন্য একাধিক বিবাহের অনুমোদন বরাবরই ছিল। ‘আমাদের দেশে যে সমস্যা তৈরি হয় সেটা হলো, যারা একাধিক বিবাহ নিয়ে কথা বলেন, তারা বিষয়টাকে এমনভাবে উপস্থাপন করে এবং এটা নিয়ে এতো হৈ হুল্লোড় করতে থাকে, যার ফলে এটা সহজের পরিবর্তে আরও কঠিন বিষয়ে পরিণত হয়ে যায়’।– যুক্ত করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘সামগ্রীকভাবে আমাদেরে যে কোনো মাসয়ালা বলার সময় প্রেক্ষাপট এবং বাস্তবতাকে সামনে রেখে কথা বলা উচিৎ। দেখা যায়, অনেকেই এ বিষয়ে অনলাইনে এক্টিভ যারা এখনো বিয়েও করেনি, কিন্তু একাধিক বিবাহের এ মাসয়ালা নিয়ে খুব বেশি সক্রিয়। একটি সুন্নাহকে জিন্দা করতে গিয়ে একটি ফরজকে তরক করে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’ মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফি বলেন, ইনসাফপূর্ণ কথা হলো মাসয়ালাটি নিয়ে আমাদের সমাজে যে ভুল ধারণা আছে সেটা দূর করার জন্য মানুষের মাঝে আলোচনা করতে হবে। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে এর উপর আমল করবেন। এটা ব্যক্তিগত আমল। এটাকে অফলাইন-অনলাইনে সংগ্রামে পরিণত করার বিষয় নয়।’ হাআমা/ |