দরসে যাওয়ার আগে যে তিন ধাপে মুতালায়া করা উচিত
প্রকাশ: ০১ মে, ২০২৪, ০৯:৫২ রাত
নিউজ ডেস্ক

|| আদনান মাসউদ ||

দরসে যাওয়ার আগে তিন ধাপে মুতালায়া করা উচিত।

১. নিজে বুঝার জন্য মুতালায়া:
 এ মুতালায়া নিয়ে দরসে যাওয়া যাবে না। সাধারণত অনেকে এমনটি করে থাকেন। এটি মারাত্মকভাবে তালিবুল ইলমদের হক নষ্ট করে।

 ২. ইফহাম ও তাফহীমের জন্য মুতালায়া :
নিজেকে তালিবুল ইলমের জায়গায় বসিয়ে চিন্তা করা, বিষয়টা কিভাবে বললে সহজভাবে তাদের বুঝে আসবে। আমার মুতালায়ার কতটুকু নেওয়ার-বুঝার ইস্তি'দাদ তালিবুল ইলমের আছে, সেটা ভাবতে হবে। তার মুস্তাওয়া নিরূপণ করতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ আমি ৫টি শরাহ থেকে বিশ পৃষ্ঠা মুতালায়া করেছি। সেখান থেকে এক পৃষ্ঠা সারনির্যাস বের করে আনব। সেই এক পৃষ্ঠা সহজভাবে তালিবুল ইলমের উপযোগী করে উপস্থাপন করব। 
সাথেসাথে এটিও খেয়াল করা চাই, দরস যেন সব শ্রেণীর তালিবুল ইলমের জন্য হয়, সবাই যেন নিজ খোরাক পায়। এই মুতালায়া মুদাররিসকে ছাত্রদের প্রিয় করে তোলবে। 
৩. দরসকে আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করার জন্য চূড়ান্ত মুতালায়া
দরসে আলোচনা যেন এলোমেলো ও অগোছালো না হয়ে যায়-সেজন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া জরুরী। 
প্রথমে ঠিক করতে হবে, আজকের দরসে/এই বাবে মোট কয়টি পয়েন্টে আলোচনা আছে। সে অনুযায়ী কথা ভাগ ভাগ করে নেওয়া।

কথার শুরু-শেষ ঠিক করা, তামহীদ, মূল বহছ, খোলাসাতুল কালাম বের করে সম্পূর্ণ দরসকে একটা তারতীব দেওয়া। খারেজী কোন মিছালগুলো বুঝানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে, সেটি আগে থেকেই ঠিক করে নেওয়া।

প্রয়োজনে মুতালায়ার সুবিধার্থে সারসংক্ষেপ নোট নেওয়া যেতে  পারে। দরসে যাওয়ার পূর্বে মূল মতন সামনে রেখে নিজের সম্পূর্ণ প্রস্তুতির সাথে মিলিয়ে নেওয়া। 
এই মুতালায়ার মাধ্যমে দরস হয়ে উঠবে চূড়ান্ত আকর্ষণীয়। ইনশাআল্লাহ। 

কয়েক ধাপে প্রস্তুতির পরেও পড়াতে গিয়ে হঠাৎ কোথাও খটকা লেগে যেতে পারে। এটি অস্বাভাবিক নয়। 

অস্বাভাবিক এবং অনুচিত হচ্ছে–সেই খটকাকে ছাত্রদের উপর চাপিয়ে দেওয়া, ভাসা ভাসাভাবে যেমন তেমন বুঝ দিয়ে কোনোরকম দরস শেষ করে চলে আসা।

এরকম কাজ ছাত্রদের সাথে চূড়ান্ত খেয়ানতের শামিল।  এতে করে ছাত্রদের সামনে উস্তাযের মর্যাদা হানিও ঘটে। তারা উস্তাযের প্রতি নিজেদের আস্থার জায়গাটুকু হারিয়ে ফেলে।

কর্তব্য হচ্ছে–কোথাও খটকা লেগে গেলে সেই বহছ/মাসআলা আপাতত স্থগিত রাখা। আগামী দিন পরিপূর্ণ হল করে পুনরায় আলোচনা করা।

খুব স্বাভাবিকভাবেই তালিবুল ইলমদের এ কথা বলা যায়, আজকে এ জায়গাটুকু আমার কাছে একটু অস্পষ্ট লাগছে, আগামী সবকে পরিষ্কার করে আবারও আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। 
এতে তাদের সামনে উস্তাযের বিন্দুমাত্র মর্যাদা হানিও হয় না। বরং উস্তাযের প্রতি তাদের আস্থা-আযমত আরও বৃদ্ধি পায়।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মুখলিস মুদাররিস হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।

লেখক: উস্তাযুল হাদীস, জামিয়াতুল মানহাল উত্তরা, ঢাকা।

হাআমা/