ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ: বিমানবাহিনীর সক্ষমতায় এগিয়ে কে?
প্রকাশ:
২১ এপ্রিল, ২০২৪, ১১:২৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার পর বদলে যায় মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপট। ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলায় ইরানও কেঁপে উঠেছিলো। ইসরায়েল নাকি ইরানেও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পক্ষেই কোনো স্বীকারোক্তি দেয়নি। আপাতত সংঘাত প্রশমনের দিকে থাকলেও দুই দেশের দ্বন্দ্বের মূল চালিকা শক্তি হবে বিমান বাহিনী। এবার দেখে নেয়া যাক বিমান শক্তিতে কোন দেশ এগিয়ে ইরান নাকি ইসরায়েল? ইরানে বিমান শক্তি ইরানের কাছে কেবল কয়েক ডজন সক্রিয় আক্রমণকারী বিমান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে যেমন আছে রুশ যুদ্ধবিমান, তেমনি ১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবের আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করা কিছু পুরোনো মার্কিন বিমানও রয়েছে। আইআইএসএস-এর তথ্য মতে, তেহরানের সংগ্রহে রয়েছে ৯টি এফ-৪ ও এফ-৫ যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন, রাশিয়ার সুখোই-২৪-এর একটি স্কোয়াড্রন ও কয়েকটি মিগ-২৯, এফ-৭ ও এফ-১৪ যুদ্ধবিমান। পাইলট ছাড়াই লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে বিস্ফোরিত হবে, এমন বিমানও আছে ইরানের কাছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ইরান কয়েক হাজার ড্রোনের মালিক। পাশাপাশি ইরানের ভাণ্ডারে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণযোগ্য মিসাইল রয়েছে। এগুলোর কোনো কোনোটি আধাটনের মতো ওয়ারহেড বহন করতে পারে। তবে ইসরায়েল পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম এমন মিসাইলের সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে ধারণা করেন বিশ্লেষকেরা। আত্মরক্ষার জন্য ইরান রাশিয়া ও দেশে নির্মিত আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে। ২০১৬ সালে রাশিয়া থেকে এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগ্রহ করে ইরান। এ ব্যবস্থায় রয়েছে দীর্ঘপাল্লার ভূমি-আকাশ মিসাইল যেগুলো বিমান ও ব্যালিস্টিক মিসাইলসহ একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে একইসঙ্গে পালটা আক্রমণ চালাতে সক্ষম। এছাড়া ইরান নিজেরা বাবর-৩৭৩ ভূমি-আকাশে ব্যবহারযোগ্য মিসাইল তৈরি করেছে। পাশাপাশি আরও উদ্ভাবন করেছে সায়াদ ও রাদ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ইসরায়েলের বিমানশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী বেশ অগ্রসর; এটির কাছে কয়েকশ এফ-১৫, এফ-১৬ ও এফ-৩৫ মাল্টিপারপাস যুদ্ধবিমান রয়েছে। গত সপ্তাহে ইরানের নিক্ষিপ্ত ড্রোন ভূপাতিত করতে এসব বিমান ভূমিকা রেখেছিল। ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর দীর্ঘপাল্লার বোমারু বিমান নেই। তবে কিছু বোয়িং ৭০৭ বিমানকে পরিবর্তন করে রিফিউয়েলিং ট্যাংকারে পরিণত করেছে এটি। ফলে এর জঙ্গিবিমানগুলো দূরের লক্ষ্যবস্তুতে গিয়েও হামলা চালিয়ে ফিরে আসতে পারবে। ইসরায়েলে পাইলটবিহীন হেরন ড্রোন একটানা ৩০ ঘণ্টারও বেশি উড়তে সক্ষম। এছাড়া ডেলিয়াহ মিসাইলের (লয়টারিং মিউনিশন) পাল্লা মাত্র ২৫০ কিলোমিটার হলেও চাইলে বিমানবাহিনী এটিকে ইরানের সীমান্তের কাছাকাছি এসে নিক্ষেপ করতে পারে। ধারণা করা হয়, ইসরায়েল দীর্ঘপাল্লার ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণযোগ্য মিসাইল তৈরি করেছে। তবে দেশটি কখনো তা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে সহায়তায় বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে ইসরায়েলে। এটি ব্যবহার করে ইরানের দীর্ঘপাল্লার ড্রোন ও মিসাইল ভূপাতিত করার সক্ষমতা রয়েছে দেশটির। তেল আবিবের অ্যারো-৩ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মহাশূন্যে ব্যালিস্টিক মিসাইলকে প্রতিহত করতে পারে। তার চেয়ে কম উচ্চতায় আগত ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে পারে অ্যারো-২। এনএ/ |