লাইলাতুল কদরে ফজিলত ও বিশেষ আমল
প্রকাশ:
০৩ এপ্রিল, ২০২৪, ০১:০৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
মহিমান্বিত মাস রমজানের শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর। এ রাতে নাজিল হয় পবিত্র কুরআন। লাইলাতুল কদরে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের ক্ষমা করেন এবং হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামসহ রহমতের ফেরেশতারা পৃথিবীতে আগমন করেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ‘কদর’ নামে একটি সূরা নাজিল করেছে এবং তাতে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। ’ হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত হজরত রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘তোমাদের মাঝে রমজান আগমন করেছে। তাতে রয়েছে এমন রাত যা হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। যে সে রাত থেকে বঞ্চিত হলো- সে কল্যাণ থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হলো। আর হতভাগা ব্যক্তি ব্যতিত কেউ তার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয় না। -সুনানে ইবনে মাজাহ হজরত রাসূলুল্লাহ সা. ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার ও আত্মিক সাধনার মাধ্যমে রমজানে কদরের রাত ও তার কল্যাণ অনুসন্ধান করতেন। বিশেষ করে রমজানের শেষ দশকে তিনি সব ধরনের জাগতিক কাজকর্ম থেকে অবসর হয়ে আল্লাহর ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতেন। তিনি এ সময় ইতিকাফ করতেন এবং ইবাদতের মাধ্যমে কদরের রাত অনুসন্ধান করতেন। হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সা. প্রত্যেক রমজানে দশ দিন ইতিকাফ করতেন এবং মৃত্যুর বছর তিনি বিশ দিন ইতিকাফ করেন। -সহিহ বোখারি হজরত রাসূলুল্লাহ সা. তার উম্মতকেও রমজানের শেষ দশকে কদরের রাত অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অধিকাংশ হাদিসে তিনি কোনো রাত নির্ধারণ করেননি। হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম তবে লাইলাতুল কদর ২৭ রমজানের রাতে হওয়ার ব্যাপারেও একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান রা. থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘কদরের রাত হলো- সাতাশের রাত। ’ -সুনানে আবু দাউদ হজরত রাসূলুল্লাহ সা. আল্লাহর ইবাদত ও জিকিরের মাধ্যমে কদরের রাত অনুসন্ধান করতেন। এ রাতে রাসূল সা. অধিক পরিমাণ নামাজ আদায় করতেন। রাত্রী জাগরণ করতেন। সাহাবাদেরও নামাজ আদায় করতে বলতেন। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে কদরের রাতে নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তার পেছনের সব পাপ মার্জনা করবেন। ’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম হজরত রাসূলুল্লাহ সা. রমজানে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করতেন। কদরের রাতে তেলাওয়াতের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতেন। হজরত ফাতেমা রা. থেকে বর্ণিত, ‘তার পিতা তাকে বলেছে, প্রতি রমজানে জিবরাইলকে আ. একবার কুরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। কিন্তু মৃত্যুর বছর তিনি তাকে দু’বার কোরআন শোনান। ’ -সুনানে বায়হাকি কদরের রাতে রাসূল সা. দোয়া ও ক্ষমাপ্রার্থনা করতেন। হাদিসে একটি বিশেষ দোয়ার বর্ণনাও পাওয়া যায়। হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে সা. বলি, কদরের রাতে আমি কী বলবো, তিনি বলেন, তুমি পড়বে- اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন। তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি। কদরের রাতের আরেকটি দোয়ার বর্ণনা হাদিসে পাওয়া যায়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. নিম্নের দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করতেন- اللّهمّ إنّي أسألُك العافية في الدّنيا والآخرة، اللّهمّ إنّي أسألك العفو উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফিদ-দুনইয়া ওয়াল আখিরা। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আ-ফিয়াতা ফি দিনি ওয়া দুনইয়ায়া ওয়া আহলি ওয়া মালি। - আল আদাবুল মুফরাদ অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের অনুগ্রহ চাই। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আমার ধর্ম, আমার জাগতিক জীবন, আমার পরিবার ও সম্পদের ব্যাপারে ক্ষমা ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। এনএ/ |