জ্ঞানবাপী মসজিদে পূজা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল এলাহাবাদ হাইকোর্টের
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৩:৫৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

ভারতের উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের নিচতলায় পূজা ও আরতি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।

মুসলমানদের করা আপিল সোমবার খারিজ করে দিয়েছে ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ফলে মসজিদের ভূগর্ভস্থ অজু ও তহখানায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজা চালিয়ে যেতে পারবেন।

এর আগে বারাণসীর জেলা আদালতও জ্ঞানবাপীর অজু ও তহখানায় হিন্দুদের পূজো ও আরতি করার অনুমতি দেওয়ার পর উচ্চ আদলতের দ্বারস্থ হয়েছিলো ভারতের আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি।

হাইকোর্টের বিচারপতি রোহিতরঞ্জন আগরওয়ালের একক বেঞ্চের রায়ে মসজিদের দক্ষিণ দিকের ‘ব্যাসজি কা তহখানা’য় হিন্দুদের পূজো, আরতি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

কলকাতা আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, এর আগেও পূজার্চনায় স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলো মুসলিম পক্ষ। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদের সিল করা একটি তহখানায় হিন্দু ভক্তদের পূজো করার অনুমতি দিয়েছিল বারাণসীর জেলা আদালত।

নিম্ন আদালতের নির্দেশ পেয়েই বারাণসী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘ব্যাসজি কা তহখানা’-য় শুরু হয়ে যায় আরতি ও পুজো। মসজিদ চত্বরের পুজো-আরতির আপত্তি জানিয়ে মসজিদ কমিটি যান উচ্চ আদালতে।

হাইকোর্টে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯৩৭ সালে জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত বিবাদের রায় মুসলিমদের পক্ষে গিয়েছিলো, তাই আর্কিওলোজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই-কে দিয়ে নতুন করে সমীক্ষা করানো যায় না।

আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ২০২২ সালে বারাণসী আদালতের নির্দেশে করা ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’-এর প্রতিবেদনে আদালতের নির্দেশে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে মুসলিম পক্ষের তরফে দাবি করা হয়। এই মামলার দ্রুত শুনানি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টেও একটি পৃথক আবেদন জানায় তারা (মসজিদ কমিটি)।

২০২১ সালের আগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’-এর তত্ত্বাবধানে মসজিদের অন্দরের ভিডিও সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর।

সেই রিপোর্ট জমাও পড়েছিল আদালতে। কিন্তু সে সংক্রান্ত নির্দেশ ঘোষণার আগেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বারাণসী জেলা আদালতে জ্ঞানবাপী মামলা স্থানান্তরিত হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আনন্দবাজার।

ভোটের আগেই নাগরিকত্ব আইন কার্যকর: অমিত শাহভোটের আগেই নাগরিকত্ব আইন কার্যকর: অমিত শাহ

উচ্চ আদালতে মসজিদ কমিটি আরো জানায়, ১৯৯৩ সালের আগে জ্ঞানবাপী চত্বরের কোথাও পূজার্চনা বা আরতির কোনো প্রমাণ হিন্দুপক্ষ দিতে পারেনি।

আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, হিন্দু পক্ষের দাবি, ‘ব্যাস কা তহখানা’ দীর্ঘদিন ধরে ‘ব্যাস’ পুরোহিত বংশের দখলে ছিলো। তাঁরা এক সময় ওখানে বসবাসও করতেন। শৈলেন্দ্রকুমার পাঠক ব্যাস নামে ওই বংশের পুরোহিত আদালতে জানান, ১৯৯৩ সালের গোড়া পর্যন্ত তাঁরা ওখানে পূজো করেছেন। কিন্তু ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিলো। ১৯৯৩ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মুলায়ম সিংহ যাদব তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

হাআমা/